খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। গতকাল রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে পলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্র রায়ন ইসলাম সায়মন (১০) অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা রহিমা আক্তার সে মাটিরাঙা পলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত।
ছাত্রের পিতা রাব্বি হোসেন জানান, আমার ছেলেটা এমনিতেই কথা কম বলে, ক্লাসের পড়া দিতে না পারায় শিক্ষিকা রাগে মারতে থাকে, ছেলে মার সজ্য করতে না পেরে ক্লাসরুম থেকে দৌড়ে বাহিরে এলে সেখানেও সে মারতে থাকে। ভয়ে স্কুল থেকে দৌড়ে বাড়িতে চলে আসে, ছেলে অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাই, শিক্ষক মারবেন তবে এভাবে মারবে তা কল্পনার ও বাহিরে। শিক্ষিকা রহিমা আক্তারের বেদম প্রহারে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, আমি এ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যথাযত আইনি ব্যবস্হা নিবো, যাতে অন্যকেউ এধরনের কাজ করতে সাহস না পায়। আমার ছেলের উপর এমন অমানবিক নির্যাতনের দৃষ্টান্ত শাস্তি চাই।
এলাকার স্হানীয় মো. রেজাউল হক বলেন, আমরা আমাদের সন্তানকে স্কুলে পড়াশোনার জন্য পাঠাই, কিন্তু স্কুলের শিক্ষিকদের বোঝা উচিত এ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শাসন নয় আদর স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে তাদের স্কুলমূখি করতে হবে।যেভাবে মেরেছে তা দেখে অন্য অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চাইবে না।এর উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা রহিমা আক্তার বলেন, ছেলেটাকে লিখতে ও পড়তে বলেছি, সে পড়েও না লিখাও লিখেনি তাই দুটো বেত্রাঘাত করেছি, তারপরে সে ঘাড় বাঁকা করে বসে থাকায় আমার একটু রাগ উঠেছে তাই মারতে গিয়ে একটু বেশি মেরে ফেলছি, ছেলেটা এখানে স্বাভাবিক ছিলো, বাড়িতে গিয়ে ব্যাপারটাকে বিগড়ে ফেলছে। এটা আমার উচিত হয়নি।
দেখা গেছে, এঘটনার পর পরেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের রুমে বসে ঐ এলাকার স্হানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ছেলের অভিভাবক, ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সামনে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে, সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করতে ছুটে আসেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
মাটিরাঙা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম সিরাজী বলেন, আজ সকালে প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে জানিয়েছেন, দ্রুত আমি সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে ছাত্রকে দেখে শিক্ষিকার কাছে জানতে চাইলাম সে স্বীকার করেছে রাগে মাথায় বেশি বেত্রাঘাত করেছে।যদিও আমাদের উপরের নির্দেশনা রয়েছে কোন বাচ্চাকে বেত্রাঘাত করা যাবে না। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে, তিনি প্রতিবেদন চেয়েছেন, আমি দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করব, যেন দ্রুত যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহণ করা হয়।
মাটিরাঙা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি(তদন্ত) মো. হাফিজ জানান, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বাদীর অভিযোগ পেলে দ্রুত মামলা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :