AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ০৫ মার্চ, ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শিবচরে প্রকৃতি জুড়ে বসন্তের রঙ ছড়াচ্ছে পলাশ


Ekushey Sangbad
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
০৭:৪৩ পিএম, ৪ মার্চ, ২০২৫
শিবচরে প্রকৃতি জুড়ে বসন্তের রঙ ছড়াচ্ছে পলাশ

ঋতুরাজে প্রকৃতি সেজেছে নবরূপে। শিমুল-পলাশ-অশোকের শাখা ভরে উঠেছে রক্তিম ফুলে। গাছে গাছে পাখির কলকাকলি। কুহু কুহু শোনা যায় কোকিলের কুহুতান। সব মিলিয়ে প্রকৃতিতে এসেছে নব প্রাণ। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের সাথে সাথে প্রকৃতি সেজে ওঠেছে তার আপন রুপ, রং আর বৈচিত্র্যে। গাছে গাছে ফুটে শোভা পাচ্ছে পলাশ, কাঞ্চন আর শিমুল। সবই যেন জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের রাজত্বকে।

মাদারীপুরের শিবচরে বিভিন্ন এলাকার গ্রামের পথে-প্রান্তের গাছে গাছে হলুদের নিবিড় সমাগম উপস্থিতির দেখা পাওয়া যায়। যেন চারপাশে মুখরিত ফুলের রঙে রঙিন মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। পালাশের গন্ধে সৌরভ ছড়াচ্ছে দিক-দিগন্তের গাছে গাছে। হলুদের আবরণে গ্রামের বিভিন্ন পথ-ঘাটে এক রৌদ্রজ্জ্বল আবেশঘন পরিবেশ যেন হৃদয়ে দোলা দিয়ে যাচ্ছে। সতেজতা ফিরে পেয়েছে গ্রামের মেঠোপথও।

জানা যায়, বসন্তকালে শিমুল ও পলাশগাছ শুধু অপরূপ শোভা বৃদ্ধি করত না। সৌন্দর্যের পাশাপাশি গাছের মালিকও আর্থিকভাবে লাভবান হতেন। শিমুলগাছের তুলা আর সেই তুলা দিয়ে লেপ-তোশকসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো। এক সময় দেশের গ্রামাঞ্চলে অহরহ পলাশ গাছের দেখা মিলতো। কালের বিবর্তনে পলাশ গাছ এখন অনেকটাই হারিয়ে যেতে শুরু করেছে।

শীতের শেষার্ধ থেকেই কমলা রঙের ফুল ফুটতে শুরু করে। এখন গাছটি ফুলে ফুলে পূর্ণ যৌবনা। ফুল শুধু গাছেই নয়, গাছের নিচে ফুল ঝরে যেন কমলা কার্পেট বিছিয়ে রয়েছে। উপজেলার গাঁয়ের মেঠো পথের ধারে অযত্ন-অবহেলায় এখনো কিছু শিমুল ও পলাশগাছের দেখা মেলে। এসব গাছের কোলজুড়ে হেসে উঠেছে রক্তিম ফুল। তবে পরিমাণে খুবই কম।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখনও গ্রামে অনেক পলাশ গাছের দেখা মেলে। বসন্ত ঋতুর আগমনে গাছ ছেয়ে ওঠে ফুলে ফুলে। ভদ্রাসন ইউনিয়নের মাদবর কান্দি মোড়ের পাশেই রয়েছে মাঝারি ধরণের কয়েকটি পলাশ গাছ। গাছ ভরে আছে শুধু ফুলে। গাছের নিচে মাটিতে কিছু ফুল বিছানা পেতেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য।

ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসা শাহিন মিয়া বলেন, ঋতুরাজ বসন্তের এই ফুল না দেখলে মনে হয় কি যেন দেখলাম না। প্রতিটি ফুলের সৌন্দর্য একেক রকম। পলাশ, কাঞ্চন আর শিমুল ফুলগুলো সেজে উঠেছে তার আপন রূপ, রং আর বৈচিত্র্য নিয়ে। যতটা সময় তাকিয়ে থাকি ততক্ষণ চোখের পলক আটকে থাকে ফুলগুলোর স্নিগ্ধতার কাছে স্রষ্টার সৃষ্টি এই অপার সৌন্দর্য যে দেখবে না সে হয়ত বিশেষ কিছু দেখা থেকে বঞ্চিত হলো।

বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালেয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘দূর্লভ হয়ে উঠেছে পলাশ ফুলের গাছ। নতুন প্রজন্মের অনেকেই পলাশ ফুলের সাথে পরিচিত নয়। ঋতুরাজ বসন্তকে মনে করে দেওয়ার জন্য একটি পলাশ গাছই প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য যথেষ্ঠ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই বসন্তের জন্য এই গাছ লাগানো দরকার বলে মনে করেন তিনি’।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (দেশ) সভাপতি ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ‘পরিকল্পিত আবাদ না হওয়ায় পলাশ গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। অযত্ন ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা এখনো কিছু পলাশ গাছ প্রকৃতিতে টিকে আছে। বসন্ত এলেই আগুন রাঙা ফুল ফুটিয়ে গাছটি নিজের অস্তিত্বের জানান দেয়। দিন দিন শিমুল-পলাশগাছ উজাড় হওয়ায় প্রকৃতির রূপ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এই গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত’।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পলাশ-শিমুলগাছ টিকে থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।’

তবে বৈশ্বিক দূষণ আর জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে ধীরে ধীরে প্রতিটি ঋতুই হারাচ্ছে তার নিজস্ব বৈচিত্র্য আর সৌন্দর্যকে। প্রকৃতিকে আর স্বরূপ ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজন পরিবেশদূষণ রোধ ও ব্যাপকভাবে বৃক্ষ রোপণ করা।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!