AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পলাশে মাছ কাটার উপার্জনে চলে শতাধিক সংসার


Ekushey Sangbad
সাব্বির হোসেন, পলাশ, নরসিংদী
০২:০১ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৫
পলাশে মাছ কাটার উপার্জনে চলে শতাধিক সংসার

বাজার থেকে মাছ কেনার পর সেই মাছ বাসায় নিয়ে কাটা একটি ঝামেলা পূর্ণ কাজ ছিল। তবে এখন সেই ঝামেলা অনেকটাই দূর হয়েছে। বাজার থেকেই মাছ কেটে নিতে পারছেন ক্রেতারা। এই মাছ কাটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলা বিভিন্ন বাজারের শতাধিক নারী পুরুষ।

এই পেশা একদিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে তাদেরকে স্বাবলম্বী করছে অন্যদিকে গৃহস্থলীর কাজকে সহজ করে দিচ্ছে। এতে করে বাজারে মাছের বিক্রিও বেড়েছে অনেক। তাদের কাঁটা মাছের বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট অংশ নানা ধরণের শিল্পে ব্যবহার হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। এক সারিতে বসে বৃহদাকৃতির বটি দিয়ে ছোট বড় প্রায় সব ধরণের মাছ কাটতে দেখা গেছে এই পেশাজীবীদের।

পলাশ উপজেলায় ছোটবড় বাজারের সংখ্যা ৫০টির মতো। এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি। ঘোড়াশাল বাজার, পলাশ বাজার, খানেপুর বাজার, ডাংগা বাজার, সাধুরবাজার, কালীবাজার, তালতলি, ওয়াপদা নয়া বাজার,পারুলিয়া বাজার, পাকড়াগঞ্জ, চরসিন্দুর বাজার, সাদ্দাম বাজার, গজারিয়া বাজার, চরনগরদী বাজার উল্লেখযোগ্য বড় বাজার।

প্রতিটি বাজারের মাছ বাজারের পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায় মাছ কাটানীদের। মাছ কেনার পরই এই ‘মাছ কাটানীদের কাছে ছুটে যায় মাছ কেটে দিতে। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দিচ্ছে। কাটানীরা মাছ মাছ কেজি ১০-২০ টাকা ও ছোট মাছ প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা নিচ্ছে।  

ঘোড়াশাল সাদ্দাম বাজারে মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহকারী হরিদাস রায় ও লিটন দাস বলেন, প্রতিটি গদিতে মাছ কাটার কাজে মোট তিনজন লোক কাজ করে। এদের মধ্যে এক জন বটি ওয়ালা, একজন আইশারি ও একজন করে কাস্টমার ডেকে আনার কাজ। বিকেল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ক্রেতাদের ক্রয়কৃত মাছ তাদের চাহিদা অনুযায়ী কেটে থাকেন। প্রতিদিন বিভিন্ন জাতের মাছ কাটেন একজন গড়ে ১‍‍`শ থেকে ১৫০ কেজি করে।

তিনি আরো বলেন, তাদের কাঁটা মোট মাছের মধ্যে ৬০ শতাংশ ছোট এবং ৪০ শতাংশ থাকে বড় আকৃতির হয়ে থাকে। ছোট মাছগুলো প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে কাটা হয়। আর বড় মাছগুলো কাটা হয় ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি। আমরা যারা সকাল বিকেল মাছ কাটি প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত থেকে হাজার টাকা ইনকাম করি। সংসারও ভালই চলে। অনেক বেকার ছেলে আগে কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়ে। তারাও ভাল আয় করছে।

আয়ান মিয়া নামে মাছ কাটার আরও একজন জানান, পূর্বে শুধু বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরার মালিকরা এসে মাছ কাটিয়ে নিয়ে যেত। কিন্তু দিনে দিনে গৃহস্থলির ক্রেতাদেরও সংখ্যা বাড়ছে। মাছ কাটার ব্যবস্থা থাকায় প্রতিটি বাজারেই ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। তুলনামূলক কম টাকা খরচে এই সুবিধা পেয়ে ক্রেতারাও বেশ খুশি।

বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। এ  দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়। এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা।

ফজলুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, এখন তো টাকা দিয়েও কাজের মানুষ পাওয়া যায় না। তাই সময় বাঁচাতে বাজার থেকে কেনা মাছগুলো কেটে নিয়ে যাই। বরং তারা না থাকলে অনেক বড় ছোট মাছ খাওয়াই হতো না।

ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারী আবুল কাশেম বলেন, মাছ কেটেও যে সংসার চালানো যায় এটা একটা সংসার চালানোর নতুন উদ্যোগ। তবে আমরা ক্রেতারাও তাদের জন্য উপকৃত হচ্ছি। কারণ অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করে, এতে তাদের সময়টা বেঁচে যায়। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্যও রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!