নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঠাকুরগাঁও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিস্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৫ কোটি টাকার কাজ শেষ করতে অনেকটা তরিঘরি করে রাতের আধারেই ড্রেন নির্মানে ঢালাই কাজ চলিয়ে যাচ্ছেন। এতে ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা।
রাতের আধারে লাগাতার কাজ চলমান রাখায় গেল শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের টিকাপাড়া এলাকায় মেসার্স নন্দন প্রেস নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রেপাইটর শফিউল ইসলাম আবারো শ্রমিকদের নিয়জিত করে ঢালাই কাজ করতে গেলে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাতে বন্ধ করেননি কাজ। পরবর্তিতে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে ছবি ধারন করতে গেলে নানা অনিয়ম চোঁখে পরে। দেখা গেছে, শ্রমিকরা মাটিযুক্ত ও অপরিচ্ছন্ন বালু দিয়ে সিমেন্ট ও পাথরের মিশ্রনে ঢালাই কাজ করছে। অন্যদিকে রাতের আধারে তরিঘরি করে শেষ করার কারনে কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে এভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ চলমান রাখলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত কাজটি বাস্তবায়নের চেস্টা করছে কি কারনে তা অজানা। আর দ্রুত কাজ শেষ করতে গিয়ে নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। আর যারা দেখভাল করবে তাদের কোন পাত্তা নেই। ঠিকাদার যা ইচ্ছে তাই করছে। এতে কাজের মান অবশ্যই খারাপ হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদকর্মীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীবকে বিষয়টি অবগত করলে পরদিন রোববার দিনের বেলা ঘটনাস্থলে এসে ড্রেনের কাজ পরিদর্শন করে দায় সারেন। উল্টো সাফাই গান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।
পরবর্তিতে সংবাদকর্মীরা এ কাজের তথ্য চাইলে তিনি কোন তথ্য না দিয়ে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। তবে যেহেতু পৌরসভায় এ কাজটি বাস্তবায়ন হচ্ছে সেকারনে সকল তথ্য সরবরাহ করেন পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌর কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য বলছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় পৌর শহরের ১২টি ওয়ার্ডে ড্রেনসহ কয়েকটি অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
আর এ কাজ বাস্তবায়নে রাজশাহীর মেসার্স সারা ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সালাউদ্দিন সোহাগ, তানভীর সিদ্দিকি কর্পোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আছিয়া আক্তার জাহানের সাথে যুক্ত হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের মেসার্স নন্দন প্রেস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শফিউল ইসলাম কাজটি বাস্তবায়ন করছে।
কাজের অনিয়মের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানা জানান, রাতে কাজ করতে গেলে যে কোন অবকাঠামো নির্মান ভাল হবে না। কেন রাতের আধারে ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে তা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সংশ্লিস্টরা বলতে পারবেন। পৌরসভায় যেহেতু কাজটি হচ্ছে সেকারনে আমরা শুধু অবগত। কাজ বাস্তবায়নে সমস্ত দায়িত্ব জনস্বাস্থ্যের।
আর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কাজ চলমান থাকায় ড্রেনের পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতেই রাতে কাজ চলমান রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে রাতে কাজ করার কোন নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে এড়িয়ে যান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :