AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ড্যান্সার তামান্না যেভাবে হয়ে উঠলেন ‘লেডি ডন’ 


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
০৬:০১ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৫
ড্যান্সার তামান্না যেভাবে হয়ে উঠলেন ‘লেডি ডন’ 

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিন একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর এমইএস কলেজে পড়াশোনা করেছেন এবং শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দুবাইয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় সাজ্জাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের সম্পর্কের সূচনা হয় মোবাইল নম্বর বিনিময়ের মাধ্যমে এবং ২০২৪ সালের প্রথম দিকে রাউজানের একটি মসজিদে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এটি তামান্নার তৃতীয় ও সাজ্জাদের দ্বিতীয় বিয়ে।

তামান্নার পূর্ববর্তী বিয়েগুলো ছিল স্বাভাবিক। তবে সাজ্জাদকে বিয়ে করার পর তার জীবন সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যায়। তিনি শুধু সাজ্জাদের স্ত্রী হয়ে ওঠেননি, বরং তার স্বামীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়ে পড়েন।

একেকবার একেক যুবককে কথিত বিয়ে করার অভিযোগ আছে তামান্নার বিরুদ্ধে। বিয়ের পর সেসব যুবকদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে সটকে পড়তেন তামান্না। সাজ্জাদও তার তেমনই এক স্বামী। বর্তমানে তামান্নার আগের ঘরের এক সন্তান রয়েছে। তামান্নার ছেলেদের মোটরসাইকেল চালানো ও কথাবার্তায় কঠোরতার জন্য তিনি লেডি ডন হিসেবে পরিচিতি ছিল। 

এদিকে সাজ্জাদ ছোট বয়সে অসহায় অবস্থায় বড় হয়েছেন। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি চট্টগ্রামের নজু মিয়ারহাট এলাকার একটি মুরগির দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তিনি অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন এবং সাজ্জাদ আলী খান নামে এক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর অনুসারী হয়ে ওঠেন। তার একসময়কার অপরাধের মধ্যে জমি বিক্রি, নতুন বাড়ি নির্মাণে চাঁদাবাজি ও মারামারি ছিল। তিনি স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্যাংগুলোর সদস্য হিসেবে নামকরা হন।

২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় সাজ্জাদ দুই ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি পালিয়ে যান এবং রাউজান এলাকায় আশ্রয় নেন। তামান্না, সাজ্জাদের এই হত্যা মামলার পর তাকে বাঁচানোর জন্য নানা হুমকি দেন এবং বলেন, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিয়ে সাজ্জাদকে জামিন করাব।’ এমন ভয়ঙ্কর হুমকি তার অপরাধমূলক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করে তোলে।

সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে স্বামীকে কারাগার থেকে ছাড়িয়ে আনার দম্ভ দেখানো ছোট সাজ্জাদের বেপরোয়া স্ত্রী তামান্না শারমিন ফেসবুক লাইভে এসে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর পর ভাইরাল হয়। এদিকে তামান্না নিজেও লাইভে স্বীকার করেছেন তার স্বামী সাজ্জাদ সন্ত্রাসী। রাগের মাথায় ওসিকে গালমন্দ করেছিল সাজ্জাদ। সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পরপরই লাইভ করে আলোচনায় আসেন তামান্না। দেখান টাকার গরম। পাশাপাশি দেন হুমকিও। যারা তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং করতে সহযোগিতা করেছে তাদের দেখে নেবেন বলেও জানিয়েছেন এই লাইভে।

জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর সাজ্জাদকে ধরতে গিয়ে তামান্নাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে ৬ জানুয়ারি তিনি জামিনে বের হন। এরপর বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান, আরও দুই এসআই ও অন্যান্য কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তামান্না। সেই মামলায় তিনি ওসির বিরুদ্ধে নিজের ভ্রূণহত্যার অভিযোগ করেন। এ নিয়ে লাইভেও আসেন তিনি। লাইভে তামান্না অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে না পেয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর তার পেটে লাথি মারলে রক্তক্ষরণ হয়ে তার সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এতে সাজ্জাদ ক্ষিপ্ত হয়ে যান।

সাজ্জাদকে ধরতে ৩০ জানুয়ারি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ। এর আগের দিন ওসি আরিফুরকে ফেসবুক লাইভে এসে হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারের পর সাজ্জাদকে চান্দগাঁও থানার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর সিএমপির মুনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, সাজ্জাদকে জিজ্ঞাসাবাদে এখনও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
 

একুশে সংবাদ/আ.ট/এনএস

Link copied!