ঈদের আনন্দকে ঘিরে আয়োজিত এক ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের কৈজুরী ও সোনাকান্দা গ্রামের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। খেলাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জেরে সৌদি প্রবাসীর ভাই বশিরুল ইসলাম (২৮)-কে প্রকাশ্যে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দুই গ্রামে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। বর্তমানে বশিরুল ইসলাম আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার (৩ এপ্রিল) ঈদের পরদিন কৈজুরী গ্রামের কিশোররা ফুটবল খেলার আয়োজন করে। খেলা চলাকালে একটি কর্নার কিক থেকে গোল হলে রেফারি গোলটি বৈধ ঘোষণা করেন। তবে খেলা দেখতে আসা পাশের গ্রামের সোনাকান্দার কিশোররা গোল হয়নি দাবি করে প্রতিবাদ জানায়।
স্থানীয় হাবিব মিয়া তাদের নিরুৎসাহিত করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং দুই গ্রামের কিশোরদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার হুমকি দেয় সোনাকান্দা গ্রামের কিছু ব্যক্তি।
দুই দিন পর, বশিরুল ইসলাম, তার বাবা আবদুর রহিম (৬০) ও চাচা আবদুল লতিফ (৬৩) রামচন্দ্রপুর বাজারে যাওয়ার পথে সোনাকান্দা গ্রামে পৌঁছালে তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় সিয়াম, জুলহাস, আল-আমিন, তামিমসহ ১০-১২ জন। বশিরুল ইসলামকে লাঠি, ঘুষি, লাথি দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয়।
প্রাণ বাঁচাতে তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিলে সেখান থেকে তুলে এনে আবারো মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
সোনাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, “ফুটবল খেলার ঝামেলার পর কৈজুরী গ্রামের লোকজনকে আমাদের গ্রামের পথ ব্যবহার না করার অনুরোধ করা হয়েছিল। তারা নিষেধ অমান্য করেই গ্রামে প্রবেশ করায় ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন জানান, ঘটনার পরপরই মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, “এখন পর্যন্ত এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :