ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে বিএসএফের বিরুদ্ধে মুরাদুর রহমান মুন্না নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তে জিরো পয়েন্টে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মুন্না ওই গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী রত্না ও বোন আমেনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, "বিকেলের দিকে মুন্না তার ধানি জমি দেখতে সেজামুড়া সীমান্তে যান। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে সন্ধ্যার দিকে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে রেখে চলে যায়।" তারা আরও বলেন, "বিজিবি সদস্যরা টহল দিতে এসে তাকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।"
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আরাফাত বলেন, "হাসপাতাল আনার পর তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।"
সরাইল ২৫ বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, "যতটুকু খবর পেয়েছি, মুরাদ নামে একজন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছিল। সে কেন সীমান্ত অতিক্রম করেছিল, বিএসএফ তাকে ধরেছে কি না, বা অন্য কেউ মারধর করেছে, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।"
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রওশন আলী বলেন, "বিকাল ৫টার দিকে মুন্না জমির কাজ করতে গিয়ে নো-ম্যানস ল্যান্ডে চলে গিয়েছিল। এ সময় বিএসএফ একটি দল পতাকা হাতে সীমানা পিলার চেক করতে আসে। তখন তারা তাকে নো-ম্যানস ল্যান্ডে পেয়ে ধরে নিয়ে যায়, যার ভিডিও আমরা পেয়েছি।" তিনি আরও জানান, "তারা তাকে ভারতের ভিতরে নিয়ে মারধর করে পরে ছেড়ে দেয়। পরে সে হেঁটে বাড়িতে আসে। কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।"
ওসি আরো বলেন, "বিএসএফের মারধরের কারণেই মুন্নার মৃত্যু হয়েছে।"
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :