জীবনের শেষপ্রান্তে এসে সরকারি ভাতা পাওয়ার স্বপ্ন যেন অধরাই থেকে যাচ্ছে মোরেলগঞ্জের হাসিনা বেগমের জন্য। বয়স ৬৫ পেরিয়েছে, স্বামী হারিয়েছেন বহু আগে, জীবনযুদ্ধে নিঃসঙ্গ এই নারী প্রতিনিয়ত হোঁচট খাচ্ছেন সরকারি সহায়তার দরজায়।
সরকারি বিধবা ভাতা পাওয়ার আশায় ৯ এপ্রিল থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ এক অফিস থেকে আরেক অফিসে ঘুরছেন তিনি। কিন্তু প্রতিবারই শুনতে হচ্ছে এক উত্তর—“সার্ভারে সমস্যা, আবেদন করা যাচ্ছে না।” হতাশ হাসিনা বেগম এখন চেয়ে আছেন সরকারের সহানুভূতির দিকে।
সরেজমিনে রোববার (১৩ এপ্রিল) মোরেলগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন কম্পিউটার দোকান ঘুরে দেখা গেছে, অনেকে সার্ভারে ঢুকতেই পারছেন না। ভাতার আবেদন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য বৃদ্ধ-বিধবা নারী-পুরুষ। তারা বলছেন, আগের পদ্ধতিই ভালো ছিল, অনলাইনের সার্ভার জটিলতায় আমাদের মতো অসহায়দের কষ্টই বাড়ছে।
উল্লেখ্য, সমাজসেবা অধিদপ্তর ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বয়স্ক ও বিধবা ভাতা কার্যক্রমে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে ৯ এপ্রিল থেকে, চলবে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আবেদন করতে পারছেন না বহু মানুষ।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, “অনেকেই এসে অভিযোগ করছেন আবেদন করা যাচ্ছে না। সার্ভারে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো এবং দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।”
১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের জন্য ভাতা কার্যক্রম চালু করা হয়। এটি বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অংশ।
তবে এমন প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সমাজের পিছিয়ে পড়া ও অসহায় মানুষদের সরকারি সহায়তা পাওয়ার পথ যেন দিনকে দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :