এক পা হারিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার হতদরিদ্র আবুল হোসেন (৩৯)। কর্মক্ষমতা হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তার। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা, নেই ওষুধ—দ্রুতই অবনতি হচ্ছে তার স্বাস্থ্যের।
আবুল হোসেন উপজেলার চরবেতাগৈর ইউনিয়নের চরশ্রীরামপুর গ্রামের মৃত হামেদ আলীর ছেলে। পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে এবং মা—সব মিলিয়ে সাত সদস্যের পরিবার। একসময় ভ্যান চালিয়ে সংসার চালালেও এখন সম্পূর্ণ কর্মক্ষমতা হারিয়ে ঘরে বসে অসহায় অবস্থায় দিন পার করছেন।
প্রায় ৯ মাস আগে হঠাৎ পায়ে ব্যথা অনুভব করেন আবুল। চিকিৎসা না করাতে পারায় পচন ধরে তার ডান পায়ে। চার মাস আগে চিকিৎসকের পরামর্শে সেই পা কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে বাম পায়ের আঙুলেও ক্ষত তৈরি হয়েছে, যা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
আবুল হোসেন বলেন, “আমার ডান পা নেই। চলাফেরা করতে পারি না। এখন বাম পায়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসার মতো টাকা নেই। পরিবারে কেউ আয় করতে পারে না, সবাই না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। আমি সরকারের সাহায্য চাই।”
তার স্ত্রী আনজুয়ারা বেগম চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, “ভালোভাবে খাইতে পারি না, চিকিৎসা তো অনেক দূরের কথা। ওষুধ কেনার টাকাও নাই। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমি সাহায্য চাই। আমার পরিবারটা যেন বেঁচে থাকে।”
প্রতিবেশী পল্লি চিকিৎসক মো. বাদল মিয়া জানান, “আবুলের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। একটি পা নেই, এখন আরেকটিতেও সমস্যা। পরিবারের কেউ উপার্জন করতে পারে না। এলাকার মানুষ যতটা পারে সহায়তা করছে, কিন্তু তা খুবই অপ্রতুল।”
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, “আবুল হোসেন যদি সরকারি সহায়তার জন্য আবেদন করেন, তাহলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব সহায়তা করা হবে।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :