গাজীপুরের কালীগঞ্জে বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন সোনালি রঙে ছেয়ে গেছে আধা-পাকা ধানের শীষ। বৈশাখের শুরুতেই জমে উঠেছে ধান কাটার প্রস্তুতি, আর মাঠে-মাঠে বইছে উৎসবের আমেজ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কালীগঞ্জ উপজেলায় মোট ৯৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হয়েছে ২৮৭৫ হেক্টর জমিতে এবং উফশী জাতের ধান ৬৯৩৫ হেক্টরে। ব্রিধান-২৮ এর পরিবর্তে এবার বেশি চাষ হয়েছে স্বল্প জীবনকালের ব্রিধান-৮৮, ব্রিধান-৯৬, ব্রিধান-১০০ ও অন্যান্য জাতের ধান।
উপজেলার বক্তারপুর, জাঙ্গালিয়া, মোক্তারপুর, বাহাদুরশাদী, জামালপুর, নাগরী ও তুমলিয়াসহ সাতটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় ফসলি জমিতে এখন ধানের সুবাসে মৌ মৌ করছে। তুমলিয়া ইউনিয়নের কৃষি জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সেখানে বছরে তিনবার ফসল হয়, যেখানে অন্যান্য এলাকার জমি এক ফসলি।
বক্তারপুর বাজারপাড়া এলাকার কৃষক মো. জয়নাল হোসেন বলেন, "ধান এখন আধা-পাকা হয়ে আসছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। আশাকরি এলাকার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে এই ফসল।"
তুমলিয়া ইউনিয়নের টিওরী গ্রামের কৃষক মো. আলী হোসেন খোকন জানান, "বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভিতরে রোপণ কিছুটা দেরিতে হওয়ায় ধান কাটতেও সময় লাগবে। তবে ফলন ভালো হওয়ার আশা করছি।"
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম জানান, "লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৮০৫ হেক্টর জমিতে আবাদ, সেখানে চাষ হয়েছে ৯৮১০ হেক্টরে। হাইব্রিড জাতের প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫.২ মেট্রিক টন ও উফশী জাতের ক্ষেত্রে ৪.১ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে আগাম জাতের ধান কর্তন শুরু হয়েছে এবং প্রত্যাশিত ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। ব্রিধান-৯৬ জাত থেকে প্রতি বিঘাতে গড়ে ২৫ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে।"
বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা এখন ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সঠিক সময়ে ধান কাটতে পারলে কৃষকদের সারা বছরের শ্রম সার্থক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :