কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামে পিতার দান করে যাওয়া রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরই ছেলে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রামের তিন পাড়ার প্রায় ২৫ শতাধিক মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালসার গ্রামের পশ্চিমপাড়া, হাজিপাড়া ও বিশ্বাসপাড়াসহ বাজারের সংযোগ সড়কটি প্রায় ৬০ বছর আগে জীবিত অবস্থায় জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে দান করেন গ্রামের সুরুজ আলী। তবে তাঁরও বহু আগে থেকেই তিন পাড়ার মানুষ ওই রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছেন।
সুরুজ আলী জীবিত থাকাকালে কারো চলাচলে বাধা দেননি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে রবুল ইসলাম সম্প্রতি রাস্তাটি ঘিরে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেছেন। গত ১৮ তারিখ রাতে হঠাৎ করে রাস্তার মাঝখানে কেটে, বাঁশ ও বিভিন্ন সামগ্রী ফেলে রাস্তাটি বন্ধ করে দেন তিনি।
এর ফলে গত কয়েকদিন ধরে তিনটি পাড়ার তিন হাজারেরও বেশি মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বাজারে যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে এলাকাবাসীর।
বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা আতিয়ার রহমান পাতা বলেন, “আমার বয়স এখন ৫০/৫১ বছর। শুনেছি আমার জন্মের আগেই রাস্তাটি ছিল। এই রাস্তা দিয়েই পশ্চিমপাড়া, হাজিপাড়া, বিশ্বাসপাড়ার মানুষ চলাফেরা করে। এখন তিনদিন ধরে রাস্তাটি বন্ধ করে রেখেছেন সুরুজ আলীর ছেলে রবুল। বহুবার বুঝানোর চেষ্টা করেছি, কাজ হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ চাই।”
প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ বলেন, “দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত একটি রাস্তা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা চরম সমস্যায় পড়েছি। এখানকার ছেলে-মেয়েরা এই রাস্তা দিয়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজারে যায়।”
সুরুজ আলীর আরেক ছেলে আবু হানিফ বলেন, “বাবা জীবিত অবস্থায় মৌখিকভাবে রাস্তাটি জনগণের যাতায়াতের জন্য দিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর রবুল মাঝে মাঝে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে কয়েকবার গ্রামবাসীর সঙ্গে বসে মীমাংসাও হয়েছে। আমরা ৬ ভাইয়ের মধ্যে ৫ জন রাস্তা খোলা রাখার পক্ষে, শুধু রবুল একা বিপক্ষে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই প্রশাসন দ্রুত বেড়া অপসারণ করে মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা খুলে দিক এবং এর স্থায়ী সমাধান করুক।”
এ বিষয়ে কথা বলতে রবুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুল ইসলাম বলেন, “এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত আবেদন পাইনি। আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রশাসনের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ সাহা। তিনি জানান, “তারা একটি আবেদন রেখে গেছেন। ইউএনও স্যার বর্তমানে ঝিনাইদহে অবস্থান করছেন, তাই আবেদনটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামীকাল তারা আবার এসে আবেদনটি দেবেন বলে জানিয়েছেন।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :