গ্রামীণ মনোরম পরিবেশে নির্মল বাতাস এবং প্রকৃতির মাঝে হেঁটে বেড়ানোর সুযোগের সাথে মুখরোচক খাবারের স্বাদ নিতে প্রতিদিন ভিড় করছে অসংখ্য মানুষ। ঝালকাঠিতে সম্প্রতি গড়ে উঠেছে এরকম একটি ব্যতিক্রমী ভাসমান রেস্তোরাঁ!
এটি ঝালকাঠি শহর থেকে একটু ভিতরে বাউকাঠিতে এই ভাসমান রেস্তোরাঁটি তৈরি করা হয়েছে। এটি বাঁশ ও কাঠের কারুকার্যে তৈরি এই ঝুলন্ত রেস্তোরাঁয় পা রাখতেই যেন মনে হয় এক নতুন জগতে প্রবেশ করেছেন। ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে যেন কোনো নৌকায় বসে আছেন। ড্রামের উপর ভাসমান এই নান্দনিক রেস্তোরাঁটি অল্প সময়েই সকলের পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে এখানে দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে এবং ছুটির দিন বা উৎসবে এই ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
তেমনি কয়েকজন দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বল্লে জানান, শহর থেকে একটু ভিতরে এটি একটি মনোরম পরিবেশ এখানে আসলে সত্যিই মন ভালো হয়ে যায়। একজন বলেন আমি সেই বরিশালের রুপাতলী থেকে এসেছি শুধু এই ভাসমান রেস্তরাঁটি দেখতে। আসলে ফেসবুক ও মিডিয়ায় যতটা না সুন্দর লাগে বাস্তবে আরও ভালো লাগারমতো একটি জায়গা এটি। এই উদ্যোগতা একজন যুবক এরকম আরও যুবকরা উদ্যোগে তা হয়ে উঠুক আমাদের দেশে।
বরিশাল হাতেম আলী কলেজ থেকে আসা এক শিক্ষার্থী জানান, খুব সুন্দর একটি জায়গা আমার নানা বাড়িতে বেড়াতে এসেছি ঝালকাঠি সদরে, পরে এই ভাসমান রেস্টুরেন্টের খোঁজ পাই ফেসবুকে পরবর্তীতে এখানে আসা। আমার সব থেকে ভালো লেগেছে একটি খালের মধ্যে মনে হলো নৌ ভ্রমণে, এখানে আসলে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে।
এখানে বাঙালি খাবারের পাশাপাশি ফাস্টফুড, চা ও কফির ব্যবস্থাও রয়েছে। ভোজনরসিকরা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন এই স্বাদ নিতে। প্রায় ৬০ জন একসাথে বসে খাবার উপভোগ করতে পারেন এই রেস্তোরাঁয়। ঈদুল ফিতরের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিন আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসছেন এই নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বেতরা বাউকাঠি খালের উপর এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি নিয়েছেন, কেওড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা
ওয়াদিজুম্মান খানের ছেলে তাজুল ইসলাম সুজন (৩৫) । তিনি দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে একটি ঔষধ কোম্পানীতে চাকরি করলেও তিনি বেশিদিন সেই পথে হাঁটেননি। নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে তিনি ঝালকাঠির বাউকাঠিতে এই ভাসমান রেস্তোরাঁটি তৈরি করেছেন। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকারও বেশি বিক্রি হচ্ছে এখানে। এই ভাসমান রেস্তোরাঁটি শুধু ঝালকাঠির মানুষের কাছেই নয়, জেলার বাইরে থেকেও আগত পর্যটকদের কাছে একটি নতুন আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। যারা প্রকৃতির শান্ত পরিবেশে মুখরোচক খাবার উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এই ভাসমান রেস্তোরাঁটি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে প্রস্তুত।
একুশে সংবাদ//ঝা.প্র//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :