AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ডিভাইজে আটকা ট্রান্সফরমার,খাঁচাবন্দি মিটার, তবুও থামছে না চুরি


Ekushey Sangbad
আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই, জয়পুরহাট
০৪:৩৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ডিভাইজে আটকা ট্রান্সফরমার,খাঁচাবন্দি মিটার, তবুও থামছে না চুরি

ইরি-বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই জয়পুরহাট জেলার মাঠে মাঠে গভীর ও অগভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। চোর ধরা যাচ্ছে না, আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেও মিলছে না স্বস্তি। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নলকূপ মালিকরা। চুরি রোধে অনেকে ট্রান্সফরমার গায়ে ইলেকট্রিক ডিভাইজ সংযোগ করেছেন,মিটার লোহার খাঁচায় বন্দি করে রেখেছেন।এমনকি পাহারার ব্যবস্থাও করছেন। তারপরও রক্ষা মিলছে না। হাইড্রোলিক হর্ণ বসিয়েও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। একাধিক ক্ষেত্রেই ট্রান্সফরমার হারিয়ে সেচ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন মালিকরা।

চুরির ভয়াবহতা এতটাই বেড়েছে যে,চোরেরা এখন চুরির পর ঘটনাস্থলে বিকাশ নম্বর লিখে চিরকুট ফেলে রেখে যাচ্ছে।সেই নম্বরে টাকা পাঠালে ফেরত দিচ্ছে মিটার।তবে ট্রান্সফরমার ফিরে পাওয়ার সুযোগ থাকছে না। কারণ সেগুলোর তামার তার খুলে নিয়ে ফেলে যাচ্ছে খালি বোতল। ফলে কোনো কাজে আসছে না বাকি অংশ।এতে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে বহুগুণে।

জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে জেলায় মোট ১৬১টি ট্রান্সফরমার ও ৭১টি মিটার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে কালাইয়ে চুরি হয়েছে ৭৬টি ট্রান্সফরমার ও ১৫টি মিটার।চোরদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মালিকরা।একদিকে পুলিশের উদাসীনতা, অন্যদিকে পল্লীবিদ্যুতের সীমিত সহায়তা দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। 

কালাই উপজেলার আপলাপাড়া মাঠে আতাউর রহমানের গভীর নলকূপের দুটি ট্রান্সফরমার চুরি হয় দেড় মাস আগে। তিনি পুনরায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে দুটি ট্রান্সফরমার স্থাপন করেন।কিন্তু তিন দিনের মাথায় সেগুলোও চুরি হয়ে যায়। থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পাননি।বাধ্য হয়ে তিনি সেচ কার্যক্রম বন্ধ করে পাশের নলকূপ থেকে পানি নিয়ে কাজ চালাচ্ছেন।

উপজেলার দক্ষিণ বস্তা গ্রামের শওকত আলীর নলকূপ থেকে ৩ এপ্রিল রাতে চোরেরা পাহারাদারকে বেঁধে রেখে তিনটি ট্রান্সফরমার ও ব্যারেল খুলে নিয়ে যায়। ১০ দিন সেচ বন্ধ ছিল। ১৫ দিন আগে ওই মিটারটিও চুরি হয়।চোরদের ফেলে যাওয়া চিরকুটে বিকাশ নম্বর ছিল, টাকা পাঠিয়ে তিনি মিটার ফেরত পেলেও তা পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি। নতুন করে আবারও মিটার কিনতে বাধ্য হন।

একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কালাইয়ের শাহিন আলমের ক্ষেত্রেও।গত ১৫ মার্চ রাতে লোহার খাঁচার ভেতর থেকে তার মিটার চুরি হয়।চোরদের বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে মিটার উদ্ধার করলেও পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তা বাতিল করে দেয়। পরে ১৪ হাজার টাকা দিয়ে নতুন মিটার কিনতে হয়।এরপর আবার ৩ এপ্রিল তার ট্রান্সফরমারও চুরি হয়।ট্রান্সফরমার তিনটি স্থাপন করতে খরচ হয় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

চোরচক্র এখন শুধু চুরি করেই ক্ষান্ত নয়,মোবাইল নম্বর দিয়ে হুমকি দিচ্ছে, ২০ হাজার টাকা না দিলে আবার চুরি হবে। অনেক মালিক ভয়ে চাঁদার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছেন। কালাই পৌর এলাকার তানজিরুল ইসলাম রানা জানিয়েছেন,তিনি নিজে ট্রান্সফরমারে ডিভাইজ বসিয়েছেন এবং মিটার লোহার খাঁচায় রেখেছেন। তবুও চোরেরা তার কাছেও চাঁদা চেয়েছে। হুমকি দিয়েছে টাকা না দিলে ট্রান্সফরমার নিয়ে যাবে। থানায় অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।ভয়ে এখন সেচযন্ত্র চালাতে আতঙ্কে থাকেন।

জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু উমাম মো.মাহবুবুল হক জানান, জেলার ৬ হাজার ৯৫২টি ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এত সংখ্যক স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি বলেন, চুরির পর আমরা পুলিশকে  জানিয়েছি,কিন্তু সব মহলের সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

জেলা প্রশাসক ও জেলা সেচ কমিটির সভাপতি আফরোজা আকতার চৌধুরী জানিয়েছেন,পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। খুব শীঘ্রই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।


একুশে সংবাদ//কা.জা.প্র//এ.জে

Shwapno
Link copied!