কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে এস আই মাজহারুল হক সোনিয়া আক্তার (২৮) এর লাশ তার পিতার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত সোনিয়া আগানগর ইউরিনয়নের জগমোহনপুর গ্রামের মোঃ আক্তার হোসেনের মেয়ে। গত ৭ জুলাই শুক্রবার ভৈরব থানায় এঘটনা ঘটেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেছেন নিহতের পিতা আক্তার হোসেন।
নিহতের পিতা আক্তার হোসেন বলেন, লাশ নিতে আমরা থানায় আসলে এসআই মাজহারুল হক লাশ হস্তান্তরের কথা বলে সাদা কাগজে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন এবং লাশ নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। বাধ্য হয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসআই মাজহারুল হককে ২০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়ের লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফন কাজ সম্পন্ন করি। পরদিন মামলা করতে থানায় আসলে এসআই মাজহারুল হক বলেন সোনিয়া মারা যাওয়ার ঘটনার দিনই অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড হয়েছে। নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনায় কেন অপমৃত্যু মামলা হবে জানতে চাইলে এ দারোগা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি দেখায় ও মামলায় ঢুকিয়ে দিবে বলে হুমকি দেন। প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি আমি উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের অবগত করলাম।
আগানগর ইউপি পরিষদের মেম্বার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ বলেন, নিহতের লাশ আনতে আমি নিজেও থানায় গিয়ে দারোগা মাজহারুল হকের সাথে কথা বললে লাশ নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দাবী করেন। বিষয়টি আমি অন্য একজন অফিসারকে মোবাইলে বলতে গেলে তিনি আমার মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেন এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন।
অভিযুক্ত দারোগা মাজহারুল হক এ বিষয়ে বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয় এবং এবিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি তিনি।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাকছুদুল আলম বলেন, দারোগার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট যার কোন ভিত্তি নেই।
উল্লেখ্য, মোছাঃ সোনিয়া আক্তারকে (২৮) বিয়ে দেন একই উপজেলার কালিপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মোর্শিদ মিয়ার পুত্র মো: আরমানের নিকট। তাদের সংসারে ২জন মেয়ে ও ১জন পুত্র সন্তান রয়েছে। সোনিয়ার বাবার কাছ থেকে টাকা আনার জন্য সে প্রায়ই সোনিয়াকে তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সইতে না পেড়ে বাবার কাছে থেকে বেশ কয়েকবার টাকাও এনে দিয়েছেন স্বামীকে। গত ৭জুলাই কালিপুর গ্রামের পাশ্ববর্তী গ্রামের একটি নির্জন জায়গা থেকে সোনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ভৈরব থানার এসআই মাজহারুল হক। নিহতের পরিবারের অভিযোগ সোনিয়াকে সোনিয়ার স্বামী আরমান ও তাঁর পরিবারের লোকজন হত্যা করে পাশ্ববর্তী গ্রামে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। প্রকৃত ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য অভিযুক্ত দারোগা মাজহারুল হত্যা মামলার পরিবর্তে অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করেন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :