সম্প্রতি ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে। এই খবর পাওয়ামাত্রই পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তোলে দেশের অসাধু ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোরতা ও ভোক্তারা পেঁয়াজ কম কেনায় দুই দিনের মধ্যেই সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। তবে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের পেয়াঁজের দাম কিছুটা বেড়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেশি পুরনো পেঁয়াজ পাইকারি ১৩০ টাকা দরে আর খুচরা বিক্রি হয় ১৪০ টাকা করে। ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, এসব পেঁয়াজ বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রতি কেজি দেশি পুরনো পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা করে, নতুন পেঁয়াজ ১২০, ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা করে। এ ছাড়া প্রতি এক পাল্লা দেশি নতুন পেয়াঁজ পাইকারি ধরে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা ধরে।
এদিকে মুড়ি কাটা পেঁয়াজ অনেকটা কম দামেই বিক্রি করতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহের মতোই প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
সকালে রাজধানীর কাওরান বাজার, শুক্রাবাদ, মোহাম্মদপুরসহ আরও কয়েকটি এলাকার কাঁচাবাজার ক্রেতাদের বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে।
রাজধানীর শুক্রাবাদ কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা শিক্ষার্থী সিয়াম আহম্মেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় ডলফিন গলির একটি মেসে থাকি। গত সপ্তাহে যে পেয়াঁজ ৯০ টাকা কেজি নিয়েছি। এক সপ্তাহ পর এসে একই পেঁয়াজ ১২০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। হঠাৎ আবার কেন বেড়ে গেলো বুঝলাম না।
শুক্রাবাদ কাঁচাবাজারে আহাদ জেনারেল স্টোরের মালিক আহাদ বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে নাই। কোথাও নাই। আমি সকালে পাইকারি বাজারে খুঁজে পাইনি। যেগুলো আছে, গত সপ্তাহের চেয়ে একটু বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমার কাছে যা আছে, ১৪০ কেজি দরে বিক্রি করছি। এ ছাড়া দেশি নতুন পেঁয়াজ ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছি।
কাঁচাবাজারের আরেক ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, দাম বৃদ্ধি হওয়ার গত সপ্তাহে সব রকম পেঁয়াজের দামে কমেছে। আজ বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে। পুরনো দেশি পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হলেও দেশি নতুন পেয়াঁজ কম দামেই বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাঠপর্যায়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয় সরকার। এ ছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশে তিন শতাধিক বেশি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীরা সরকারকে সহযোগিতা করেননি। বরং এ সময় তারা পণ্য হাতবদলের মাধ্যমে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করেছেন। সরকার পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করছে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে মধ্যস্বত্বভোগীদের লাগাম টানা না গেলে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা কষ্টসাধ্য হবে।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :