বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেছেন, পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে সরকার ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে। সরকারের এই ঘোষণায় পোশাকশিল্পের কর্মীরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারা ন্যায্য মজুরি পায়নি।
তিনি আজ রাজধানীর একটি গার্মেন্টেসে গার্মেন্টস সেক্টর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে পোশাকশিল্পের কর্মীদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার প্রদানকালে এসব কথা বলেন। সেক্টর সভাপতি সোহেল রানা মিঠু-এর সভাপতিত্বে ও লোকাল গার্মেন্টস যাত্রাবাড়ী অঞ্চলের পরিচালক জোবায়ের আল মাহমুদ-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও ঢাকা মহানগরী লোকাল গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মীর মোহাম্মদ জুলহাস প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, পোশাকশিল্পের কর্মীরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তাদের পরিশ্রমের ফলে পোশাকশিল্প আজ একটি শক্তিশালী অবস্থান দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আজকে রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ আসে পোশাকশিল্প থেকে। পোশাকশিল্পের এতো উন্নতি সত্তে¡ও মালিকরা শ্রমিকদের পরিশ্রমকে সরাসরি অস্বীকার করছে। তারা শ্রমিকদের পরিশ্রমকে মূল্যায়ন করছে না। নামমাত্র মজুরি দিয়ে শ্রমিক কাজ করতে বাধ্য করছে।
তিনি বলেন, গত ২-৩ বছর ধরে দেশে উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি চলছে। সরকারি হিসাব মতে যা ১৫-২০ শতাংশ। অথচ এই সময়ে শ্রমিকের মজুরি বাড়েনি। আজকের বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। চাল ডাল তেল শ্রমিকদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এমনকি চলতি শীতের সবজির দামও শ্রমিকদের হাতের নাগালে নেই। ফলে শ্রমিকরা এখন বাজারে যেতে ভয় পায়। তারা একবেলার খাবার কোনো মতে দুইবেলায় খেয়ে বেঁচে আছে। শ্রমিকদের এই দুর্দশার দেখার আজ কেউ নেই।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের পীঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তারা মালিকদের কাছে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘদিন ধরনা দিয়ে আসছে। কিন্তু মালিকরা শ্রমিকদের দুর্দশা না দেখার ভান করে সকল দাবি উপেক্ষা করেছে। পরবর্তীতে শ্রমিকরা রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হয়েছে। দীর্ঘদিন শ্রমিকরা রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার ও মালিকদের কাছে দাবি উপস্থাপন করেছে। সরকার কৌশলে শ্রমিকদের রাজপথ থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ড ঘোষণা করে। কিন্তু এই বোর্ড শ্রমিকদের দাবি আমলে না নিয়ে মালিকদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করেছে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করার জন্য বারবার সরকার ও মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আগামী দিনেও অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রাম এ সংগঠন চালিয়ে যাবে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :