স্তূপ করে রাখা গরুর হাড়গোড়কে আবর্জনা ভাবলে ভুল হবে। কোটি টাকার রমরমা ব্যবসা হচ্ছে একে ঘিরে। যা বিদেশে রপ্তানি করে বছরে আয় হচ্ছে গড়ে প্রায় তিনশ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এ খাতে রপ্তানি আরো বাড়ানো গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও অনেকটাই কমে আসবে। এ দৃশ্য দেখা যায় রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার। বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা গরুর এসব উচ্ছিষ্ট সংগ্রহের পর চলে কেজিদরে বেচাকেনা।
আড়তের কর্মচারীরা জানান, যারা ময়লা টোকায় তারা এসে এগুলো বিক্রি করে। রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার, গুলিস্তান পুরান ঢাকার ময়লার ভাগার থেকে এসব সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করা হয়।
স্থানীয়ভাবে এই ব্যবসা ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আড়ৎ। ব্যবসায়ীরা জানান, সারা বছর এতে আয় হলেও কুরবানি ঈদে বাড়ে এর অংক। সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণের পর বন্দরনগরী চট্টগ্রাম হয়ে এগুলো সরাসরি রপ্তানি হয় নানা দেশে। রপ্তানি সংশ্লিষ্টদের দাবি, বছরে তাদের আয় প্রায় ৬০ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের পর ১৫ দিনে তিন মাসের পণ্য কেনা হবে। এই তিনমাস এই হাড়গোড় ভেঙে কোম্পানিকে দেয়া হবে। কেজি হিসেবে এক গাড়ি ৪ থেকে সাড়ে ৪লাখ টাকা বিল করা হয়।
জোরাক ট্রেড সোর্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরশাদ হোসেন শালিম বলেন, আমরা ভিয়েতনাম, হংকং এবং থাইল্যান্ডে এগুলো পাঠাই। এগলো পরে প্রোসেস করে চীনে পাঠিয়ে দেয়া হয়। গতবছর প্রায় ৫০ লাখ ডলার রপ্তানি করা হয়েছে।
দেশীয়ভাবে এসব পণ্য বর্জ্য মনে করা হলেও বিদেশে রয়েছে এর বেশ চাহিদা। খাদ্য, ওষুধসহ নানা শিল্পে ব্যবহার করা হয় এগুলো।
প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. মো. মোহাব্বত আলী বলেন, এসব হাড় থেকে জিনেটিন তৈরি করা হয়, বিভিন্ন ধরণে গ্লু তৈরি করা হয়, ওয়েনমেন তৈরি করা হয়। চীন এবং জাপানে এগুলোর খুব কদর রয়েছে।
এ খাতে রপ্তানি আরও বাড়ানো গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মত সংশ্লিষ্টদের। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, গরুর যৌনাঙ্গের দাম ১৫ থেকে ২০ ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে প্রতি বছর পশুর যৌনাঙ্গ, পাকস্থলী ও হাড় রপ্তানিতে গড়ে আয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :