AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে পাস হচ্ছে বাজেট


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১:০৮ পিএম, ৩০ জুন, ২০২৪
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে পাস হচ্ছে বাজেট

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হচ্ছে। ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার নিয়ে এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। দেশের ৫৩তম এই বাজেটের আকার বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

শনিবার (৩০ জুন) বিকেলে সংসদে অর্থ বিল উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। রোববার পাস হওয়ার পর সোমবার থেকে কার্যকর হবে নতুন বাজেট।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে ছোটখাটো দু-একটি বিষয় ছাড়া তেমন কোনো বড় সংশোধনীর সম্ভাবনা নেই। তবে এবারের বাজেটে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার বিষয়টি।

বাজেট উত্থাপনের সময় সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার।

এদিকে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উচ্চাভিলাষী নয় উল্লেখ করে বলেন, এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে সরকার।

‘আমি এই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী মনে করি না। বাজেট বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। ২.৬৫ লাখ কোটি টাকা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং ৬.৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার।

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলেছেন। কেউ বলেছেন ঘাটতি বাজেট। এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে কি না? চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই তো আমাদের কাজ। আমরা তো চ্যালেঞ্জ নিয়েই চলতে চাই এবং চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, হ্যাঁ, একটা লক্ষ্য আমরা স্থির করি, শতভাগ কখনো পূরণ হয় না, হওয়া সম্ভব নয়। তারপরও আমাদের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে যে এখানে আমরা যাবো। সেটা আমরা যেতে পেরেছি।

তিনি বলেন, কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট। আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই না সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা আমরা যে গড়ে তুলবো তারই পদক্ষেপ হিসেবে এই বাজেটে বিভিন্ন যে লক্ষ্যগুলো আমরা স্থির করেছি সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। আমি মনে করি এই বাজেটের মধ্যে দিয়ে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০৪১ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে।

আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইশতেহার ভুলে যায় না এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের চেয়ে এবারের বাজেটের আকার বাড়ছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এটি দেশের ৫৩তম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট।

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এবারের বাজেটে আগামী ১ জুলাই (সোমবার) থেকে নিয়োগ পাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের অবসর-পরবর্তী পেনশন-সুবিধার পরিবর্তে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকছে। স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের এই স্কিমের আওতায় আনা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।

আগামী অর্থবছর থেকে নিয়োগ পাওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর-পরবর্তী পেনশন সুবিধার পরিবর্তে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি। করমুক্ত আয়কর সীমা বিদ্যমান সাড়ে তিন লাখ টাকাই বহাল থাকছে।

বাজেট অনুযায়ী, আয়ের প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর কোনও কর দিতে হবে না। পরবর্তী এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী তিন লাখ টাকায় ১০ শতাংশ, পরবর্তী চার লাখ টাকায় ১৫ শতাংশ, পরবর্তী পাঁচ লাখ টাকার ওপর ২০ শতাংশ ও বাকি আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ আয়কর দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

নতুন বাজেটে ১৫টি খাতে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। খাতভিত্তিক জনপ্রশাসন খাতে এক লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা, সুদ খাতে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এক লাখ ১১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৮২ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৪৭ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা, কৃষি খাতে ৪৭ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৪৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা, প্রতিরক্ষা খাতে ৪২ হাজার ১৪ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ৪১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ৩৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৫ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা, গৃহায়ণ খাতে ৬ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা; বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৮ হাজার ৫৭৬ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৮ দশমিক ১ শতাংশ বাড়িয়ে ৪১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা করার বিষয়টি সরকার চূড়ান্ত করেছে বলে জানা গেছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা।

বর্তমানে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক ও কর অব্যাহতি থাকলেও নতুন বাজেটে তা নেই। এ সুবিধা কমিয়ে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত প্রস্তাব বহাল থাকছে।

স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ৪ হাজার ৩২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব ফ্ল্যাট নির্মাণের পর স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৪ হাজার ৮৫৬টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ চলছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপণ্যের ওপর উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। চাল, গম, আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টা, ভোজ্যতেল, লবণ ও চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহকারীরা ঋণপত্রের ওপর কর হার ১ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভুগতে থাকা গ্রাহকরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

নতুন বাজেট সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংকটে গণমুখী বাজেট হয়েছে, বাস্তবসম্মত হয়েছে। দলের নির্বাচনি ইশতেহারে দেওয়া অঙ্গীকার ও অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় নিয়ে বাজেট দেওয়া হয়েছে। ইশতেহারে দেওয়া অঙ্গীকার ও অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় নিয়ে বাজেট দেওয়া হয়েছে। কারও প্রেসক্রিপশন মেনে বাজেট প্রণয়ন হয়নি। বাস্তবসম্মত হয়েছে এই বাজেট।


একুশে সংবাদ/এ.ট.প্র/জাহা

Link copied!