ডলারের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় এবং ঈদুল আজহার কারণে চলতি বছরের জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এক মাস না যেতে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। দেশজুড়ে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কমে গেছে রেমিট্যান্স।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী জুলাই মাসে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের (২০২৩) সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার।
নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসের প্রথম কার্যদিবসে আগের মাসের রেমিট্যান্সের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা প্রকাশ করেনি। বিকেলে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকের কাছে রেমিট্যান্সের তথ্য জানতে চাইলে বলেন, এখনো প্রতিবেদন কমপ্লিট হয়নি। কাজ চলছে, কমপ্লিট হলে জানানো হবে। পরে বিকেল ৫টার দিকে প্রতিবেদন প্রকাশ না করে সংক্ষিপ্তভাবে শুধু জুলাই মাসে কত ডলার এসেছে তা হোয়াটসঅ্যাপে দেন।
মুখপাত্র জানান, জুলাই মাসে ১৯০ কোটি ৯০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। আগের বছর জুলাই মাসে যা ছিল ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস (২০২৩ সালের) জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বর ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে এসেছে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে আছে ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
দেশে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে চলতি মাসে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্দোলনে সহিংসতায় বহু হতাহতের প্রতিবাদে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন করছেন অনেক প্রবাসী।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা।
একুশে সংবাদ/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :