বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রেকর্ড জরিমানার পরের কার্যদিবসে ধস নেমেছে দেশের পুঁজিবাজারে। বুধবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন হয়েছে। এদিন ডিএসইতে শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ৩৪৭টির। বুধবার (২ অক্টোবর) পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস শেষে এ তথ্য জানা যায়।
ডিএসইতে বুধবার কমেছে সবকটি সূচকের মান। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩২ দশমিক ২৯ পয়েন্ট ও ডিএসইএস সূচক ৩২ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ৪৫৩ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে ও ১ হাজার ২১৯ দশমিক ৭০ পয়েন্টে। আর ৫১ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমেছে ডিএস-৩০ সূচকের মান। সূচকটি অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৮৮ দশমিক ০১ পয়েন্টে।
তবে ডিএসইতে এদিন বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। লেনদেন হয়েছে ৪৪০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার। আর গত কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৮৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেন বেড়েছে ৫১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ডিএসইতে বুধবার ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯টি কোম্পানির, কমেছে ৩৪৭টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
অন্যদিকে দেশের অপর শেয়ারবাজার সিএসইতেও বুধবার কমেছে সব কটি সূচকের মান। সিএএসপিআই সূচক ৩০৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট ও সিএসসিএক্স সূচক ১৮৭ দশমিক ২৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২৯১ দশমিক ০৩ পয়েন্টে ও ৯ হাজার ২৮৪ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। আর সিএসই-৫০ সূচক ২৩ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট ও সিএসআই সূচক ২১ দশমিক ২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ১৫৮ দশমিক ০৭ পয়েন্টে ও ৯৯৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ২৫৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২ হাজার ৪৫৪ দশমিক ৮০ পয়েন্টে।
তবে সিএসইতে এদিন বেড়েছে লেনদেনে পরিমাণ। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেন বেড়েছে ৭ লাখ টাকা। সিএসইতে ২১৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৪টির, কমেছে ১৭৭টি ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টি কোম্পানির শেয়ার দর।
এর আগে গত ১ অক্টোবর বেক্সিমকোর শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে গতকাল মঙ্গলবার ৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে রেকর্ড ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
জরিমানা করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি, ট্রেড নেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে ৪ কোটি ১ লাখ, মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, জুপিটার বিজনেসকে ২২ কোটি ৫০ লাখ, এপোলে ট্রেডিংকে ১৫ কোটি ১ লাখ, এ আর টি ইন্টারন্যাশনালকে ৭০ কোটি, আব্দুর রউফকে ৩১ কোটি, ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এ পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই সূচকের বড় পতন হয়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই দরপতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষ হয় এক প্রকার ধস দিয়েই।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :