মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে বেসরকারি শিক্ষকরা আজ থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছেন।
নেতারা বলেছেন, সোমবার রাত ১২টার মধ্যে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। যদি প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক নেতাদের ডেকে নিয়ে বসেন তবেই আন্দোলন বন্ধ করবেন। অন্যথায় আজ মঙ্গলবার থেকে কাফনের কাপড় গায়ে জড়িয়ে অনশন কর্মসূচি শুরু হবে। গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চলছে তাদের কর্মসূচি। সোমবার এখান থেকেই তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের দাবি জানান।
সোমবার শিক্ষকদের সামনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুল রহমান মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ।
তারা বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর হুমকি-ধামকিকে শিক্ষক সমাজ ভয় পান না। তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই শিক্ষকরা এই আন্দোলনে এসেছেন। শিক্ষকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এ সময় যেসব সম্মানিত শিক্ষককে ক্লাসে থেকে শিক্ষার্থীদের মানুষ গড়ার কাজে ব্যস্ত থাকার কথা। তারা আজ নিজেদের অধিকার ও দাবি আদায়ে পথে নেমেছেন। শিক্ষকরা প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছেন প্রেস ক্লাবের সামনে। অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর পরও সরকারের দায়িত্বশীল কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। জাতীয়করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ঘরে ফিরে যাবেন না। এ অবস্থায় আগামীকাল (আজ) থেকে কাফনের কাপড় পরেই আন্দোলন চলবে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কথা শুনে তার পর যা ভালো হয় তাই করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা হৃদয়ের ব্যথা ও কষ্টের কথা বলতে চাই। তিনি আমাদের না ডাকা পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না।
একাধিক শিক্ষক নেতা তাদের বক্তব্যে বলেন, মাউশির যে ভূমিকা তা মেনে নেওয়া যায় না। আইএলও সনদ অনুযায়ী শিক্ষকদের আন্দোলন করার অধিকার আছে। এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। নেতাদের বক্তব্য চলাকালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ব্যানার হাতে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় ফেনীর পরশুরাম উপজেলার শালধর মোহাম্মদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জ উঁচাখিলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষকরা এসে জড়ো হন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে। এ সময় তারা বিভিন্ন গানের প্যারোডি বানিয়ে মর্মস্পর্শী গান পরিবেশন করে বৈষম্যের প্রতিবাদ জানান। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত নেতারা সারা দিনই বক্তব্য দেন। নেতারা শিক্ষামন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ে বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
একুশে সংবাদ/স/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :