ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করার আদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার গল্প ‘শরীফ থেকে শরীফা’ প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়ে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর থেকেই আলোচনা-সমালোচনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এরপরই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বিষয়টিকে বৈষম্যমূলক আচরণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আসিফ মাহতাব উৎস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সাথে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোনো চুক্তি নেই। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার কর্মী এবং তাদের চুক্তির গোপনীয়তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যাম্পাসে সবার মাঝে সহযোগিতামূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করে।
গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের দুটি পাতা ছেঁড়েন আসিফ মাহতাব।
জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চরমোনাই আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
বইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাইয়ের অভিযোগ তোলেন মাহতাব। এ সময় তিনি সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ টাকা দিয়ে বইটি বাজার থেকে কিনতে বলেন। পরে বইয়ের ট্রান্সজেন্ডারের গল্প থাকা দুটি পাতা ছিঁড়ে আবার দোকানে ফেরত দিতে বলেন এই শিক্ষক।
এই ঘটনার পর রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাহতাব লেখেন, ‘আজকে আমি ব্র্যাকে রেগুলার ক্লাস নিয়েছি। আমাকে এইমাত্র ফোন করে জানানো হয়েছে যে, আমি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ক্লাস নিতে না যাই। আমি জানি না হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত তারা কেন নিল। আমাকে কোনো কারণ তারা দেয়নি।’
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :