তীব্র দাবদাহের কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার (৭ মে) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এর আগে সোমবার (৬ মে) উপসচিব আক্তারুন্নাহারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (৭ মে) থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (প্রাক-প্রাথমিকসহ), শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো পরিচালিত লার্নিং সেন্টারসমূহের শ্রেণি কার্যক্রমসহ সকল কার্যক্রম ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী যথারীতি চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এর আগে তীব্র তাপদাহের কারণে এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর গত ২৮ এপ্রিল থেকে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হয়। তবে দাবদাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত ক্লাসের সময় কমিয়ে আনা ছাড়াও প্রাত্যহিক সমাবেশ বা অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়।
অন্যদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী- শনিবার (১১ মে) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। সোমবার (৬ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম বিপ্লব এ ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না রাখার জন্য শিক্ষক সমাজের পক্ষে আগেই বিবৃতি দেয়া হয়েছে, যা গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের এমন একতরফা সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকরা সংক্ষুব্ধ।
এতে আরও বলা হয়, এ পরিস্থিতিতে প্রতিবাদস্বরূপ ‘কর্মবিরতি’ পালনের জন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্তরের শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে প্রতি শনিবার পুরো কর্মদিবস ‘কর্মবিরতি’র মতো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।
শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা তুলে ধরে তারা বলেন, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থীর সৃষ্ট নয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ হতেই পারে, আগেও হয়েছে। সে কারণে নির্ধারিত ছুটি কমিয়ে দেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তারা বলেন, অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চিকিৎসা নেয়া, আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানো, আচার-অনুষ্ঠান ও বিশ্রামসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ থাকেন। একদিনের ছুটিতে যাবতীয় কাজ ও সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এতে সামাজিক, শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা আরও বলেন, জাতীয় দিবসগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান নিতে হচ্ছে, অথচ সেদিন অন্যদের ছুটি। শুধু তাই নয়, শিখন ঘাটতি পূরণ করতে গত বছরের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ও শীতকালীন ছুটি বাতিল করা হয়েছে। চলতি বছর রমজানের ছুটি কমানো হয়েছে, যা মোটেই সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি। এসব সিদ্ধান্ত নির্লিপ্ততারই বহিঃপ্রকাশ।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :