কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়েছে ছাত্রলীগ। তবে, অবরোধ করে দাবি আদায়ের এই পদ্ধতিকেও সমর্থন করছেন না দেশের শীর্ষ এই ছাত্র সংগঠনের নেতারা। বলছেন, আন্দোলন আন্দোলন খেলায় সাধারণ মানুষ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কারো কোন কথা থাকলে তা আদালতে বিস্তারিত বলতে পারবে। সেখান থেকেই বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান আসবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে ‘জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা ও কোটার যৌক্তিক সমাধান’ নিয়ে পূর্ব ঘোষিত সংবাদ সম্মেলন শুরু হয় বেলা ১২টায়। সেখানে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে দুর্নীতির কিছু তথ্য তুলে ধরে বিএনপি সরকারের সমালোচনা করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। বলেন, লন্ডন থেকে যিনি বয়ান দিচ্ছেন তার কোন যোগ্যতাই ছিল বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার। বিএনপির সময়ে বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। ছাত্রদলের ক্যাডাররা ওই সময় নিয়োগ পেয়েছে। যার কারণে পরীক্ষাও বাতিল হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সময় কোন বিসিএস বাতিল হয়নি। যারা মেধাবী তারাই নিয়োগ পেয়েছে।
আজকে যারা আন্দোলন করছে তারা কি ছাত্রজীবী না আন্দোলনজীবী- প্রশ্ন তুলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, যারা ছাত্র; আদালতের আদেশের পর তারা সরে এসেছেন। কিন্তু এখনও যারা আন্দোলন করতে চাচ্ছেন, তাদের রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে আমাদের প্রশ্ন আছে। এই আন্দোলনের কারণে জণগনের সমস্যা হচ্ছে, এইচএসসি পরীক্ষাথীদের সমস্যা হচ্ছে, রোগীদের হাসপাতালে যেতে সমস্যা হচ্ছে। আন্দোলন আন্দোলন খেলায় সাধারণ মানুষ দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।
যে কোন বিষয়ে আন্দোলন করা যায়, কিন্তু মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় যৌক্তিক না জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীরা সাধারণ মানুষের দিকে তাকাচ্ছে না। কোন অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে এটার সমাধান সম্ভব নয় বলেই ছাত্রলীগ মনে করে। তাই এখানে তাড়াহুড়ো নয়, চাপ প্রয়োগ নয়। আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই যারা আন্দোলনের উস্কানি দিচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের প্রশ্ন থেকেই যায়।
আন্দোলনকারীদের এটাও মনে রাখা দরকার, দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। জনগণকে জিম্মি করা আন্দোলন-অবরোধে রায়কে প্ররোচিত করা যাবে না বলেই মনে করে ছাত্রলীগ। যারা আন্দোলন করছেন, আপনারা অপেক্ষা করুন। আদালতের উপর আস্থা রাখুন। ছাত্রলীগ মনে করে, দেশের মানুষের জন্য যেটা ভালো আদালত তেমন সিদ্ধান্তই দেবে।
এর আগে একই ইস্যুতে কথা বলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। তিনি বলেন, বুধবার আদালত একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আপিল বিভাগে চার সপ্তাহের সময় নিয়েছেন। কারো কোন কথা থাকলে তা আদালতে বিস্তারিত বলতে পারবে। এমন অবস্থায় আদালতের এই আদেশ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কোন কোন ক্ষেত্রে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে বলেই মনে করি।
এসময় তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা আন্দোলন করছেন তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কোন কর্মসূচি দেবেন না।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :