সাধারণ মানুষের বিবাহবিচ্ছেদের খবর খুব একটা জানাজানি না হলেও তারকাদের বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে। তাদের বিয়ে এবং বিচ্ছেদ নিয়ে কৌতুহলেরও শেষ নেই। আলোচনা-সমালোচনায় তোলপার হয় মিডিয়াপাড়া থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যম। এমনকি তারকারদের বিয়ের খবরের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে ধরেই নেন পরবর্তীতে শোনা যাবে ডিভোর্সের খবর। আর এ এমনি কিছু তারকা দম্পতিদের কথা বলবো আজ। বিবাহবিচ্ছেদের মাধ্যমে যারা সম্পর্কের ইতি টেনেছেন।
আলমগীর-খোশনুর:
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আলমগীর প্রথমে বিয়ে করেন গীতিকার খোশনুরকে। তাদের কন্যা সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর। পরে আলমগীর খোশনুরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাহিত জীবনের ইতি টেনে সংগীতশিল্পী রুনা লায়লাকে বিয়ে করেন। এখন তাদের সুখের সংসার।
হুমায়ূন আহমেদ-গুলতেকিন:
বিচ্ছেদের মাধ্যমে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ও গুলতেকিনের ৩০ বছরের সংসারের ইতি ঘটে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার পরে হুমায়ূন আহমেদ বিয়ে করেন অভিনেত্রী শাওনকে। তাদের বিয়ে মিডিয়ায় রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছিল।
হুমায়ুন ফরিদী-সুবর্ণা মুস্তাফা:
অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী ও সুবর্না মুস্তাফা নাট্যমঞ্চে একসঙ্গে অভিনয় করতেন। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ফরিদী তার প্রথম স্ত্রী মিনুর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে ১৯৮৪ সালে অভিনেত্রী সুর্বনা মুস্তফাকে বিয়ে করেন। এই দম্পতি দীর্ঘ ২৪ বছর একসঙ্গে সংসার করেন। ২০০৮ সালে সুর্বণা ডিভোর্স দেন হুমায়ুন ফরিদীকে।
ইলিয়াস কাঞ্চন-দিতি:
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ও জনপ্রিয় নায়িকা দিতি। সন্তানদের কথা চিন্তা করেই নাকি তারা একে অপরের হয়েছিলেন। কিন্তু বেশি দিন টেকেনি সে সংসার। যে সন্তানদের কথা চিন্তা করে তারা এক হয়েছিলেন সেই সন্তানরা একে অপরকে এক পরিবারের ভাবতে পারেননি।
শমী কায়সার-রিঙ্গো:
১৯৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের চিত্রনির্মাতা রিঙ্গোকে বিয়ে করেন শমী কায়সার। বিয়ের স্থায়িত্ব ছিল দুই বছর। নানা কারণে তাদের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে সেই বিয়ে ভেঙে যায়।
তারিন-সোহেল আরমান:
চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনের ছেলে অভিনেতা ও পরিচালক সোহেল আরমানের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন অভিনেত্রী তারিন। বাবা-মায়ের অজান্তে পালিয়ে গিয়ে ২০০১ সালে তারিন বিয়ে করেন সোহেলকে। ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও পরে জানাজানি হয়ে যায়। এরপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভেঙে যায় সে সম্পর্ক।
বিজরী বরকত উল্লাহ-শওকত আলী ইমন:
অভিনেত্রী বিজরী বরকত উল্লাহ ও সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে ফুটফুটে সুন্দর এক কন্যা সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু তাদের এ বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। ডিভোর্স হয় তাদের। বিজরী পরে বিয়ে করেন অভিনেতা ইন্তেখাব দিনারকে।
জয়া-ফয়সাল:
অভিনেত্রী জয়া আহসান মডেল-অভিনেতা মোহাম্মদ ফয়সাল আহসান উল্লাহ্ সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ধানমন্ডিতে প্রেমের সোপান হিসেবে একটি ফাস্টফুডের দোকান খুলতেও দেখা যায় তাদের। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু কিছু বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের ঝড় বইতে শুরু করে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। স্বামী ফয়সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠান জয়া।
অপূর্ব-প্রভা:
ছোট পর্দার অভিনয় শিল্পী অপূর্ব ও প্রভা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। অপূর্বর সঙ্গে প্রভার বিয়ের কিছুদিন পরে সাবেক প্রেমিক রাজিবের সাথে প্রভার কিছু ভিডিও চিত্র ফাঁস হলে, অপূর্ব ডিভোর্স দেন প্রভাকে। বিচ্ছেদের পর অপূর্ব নতুন সংসার বাঁধেন নাজিয়া হাসান অদিতির সঙ্গে। তবে অদিতির সাথে সংসারও টেকেনি অপূর্বের।
হিল্লোল-তিন্নি:
মিডিয়াপাড়ায় হিল্লোল-তিন্নির বিয়ে বেশ আলোচিত ছিল। ধর্মান্তরিত হয়ে মা-বাবাকে ছেড়ে হিল্লোলের কাছে চলে আসেন তিন্নি। এ দম্পত্তির ঘর আলো করে আসে এক কন্যা সন্তান। তবে এই তারকা দম্পত্তির সংসারও টেকেনি। তিন্নির প্রতি মাদক ও পরপুরুষের আসক্তির অভিযোগ তোলেন হিল্লোল। এ নিয়ে দু’জনই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ তোলেন। পরবর্তীতে আরেক মডেল অভিনেত্রী নওশীনকে বিয়ে করেন হিল্লোল।
আফসানা মিমি-গাজী রাকায়েত:
একটি নাট্যদলে কাজ করতে গিয়ে আফসানা মিমির পরিচয় হয় নির্মাতা-অভিনেতা গাজী রাকায়েতের সঙ্গে। পরিচয়ের পর সখ্য। সময়ের ব্যবধানে সেই সখ্য গড়ায় প্রেমে। অতঃপর বিয়ে। কিন্তু বিয়েটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৯৬ সালে বিচ্ছেদ ঘটে আফসানা মিমি-গাজী রাকায়েতের।
জেমস-রথি:
জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস ভালোবেসে বিয়ে করেন অভিনেত্রী রথিকে। কিন্তু তাদের এ সংসার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। জেমস প্রেমে মজে গিয়েছিলেন প্রবাসী বেনজির নামের এক তরুণীর প্রেমে। আর এতেই ভেঙে যায় তাদের সংসার।
রবি চৌধুরী-ডলি সায়ন্তনী:
সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরী ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীকে। কিন্তু তাদের ভালোবাসার সংসার শেষ পর্যন্ত টেকেনি।
পার্থ বড়ুয়া-শ্রাবন্তী:
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সোলসখ্যাত ব্যান্ড তারকা পার্থ বড়ুয়া এবং অভিনেত্রী ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী। কিন্তু খুব বেশিদিন সেই প্রেম স্থায়ী হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে মিডিয়া থেকে দূরে রয়েছেন শ্রাবন্তী; সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
হৃদয় খান-সুজানা:
হৃদয় খান প্রায় চার বছর ধরে প্রেম করে বিয়ে করেন সাত বছরের বড় সুজানাকে। পত্র-পত্রিকা আর টিভির সামনেও স্বগর্বে নিজের প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা বলেছেন হৃদয় খান। কিন্তু হৃদয় খানের অনেক সাধনার বিয়ে বছর ঘোরার আগেই ভাঙনের মুখে পড়ে। কারণ, পারস্পরিক সমঝোতা না হওয়া। এরপর বিচ্ছেদ হয় হৃদয়-সুজানার।
নাদিয়া-শিমুল:
শোবিজ জগতে আলোচিত বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে নাদিয়া ও শিমুলের জীবনে। নাদিয়া শিমুলকে ডিভোর্স দিয়ে বিয়ে করেন আরেক তারকা নাঈমকে।
শখ-নিলয়:
শোবিজের আলোচিত তারকা দম্পতি শখ ও নিলয়। ভালোবেসে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি শখ ও নিলয় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন এই জুটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদেরও একই পথে হাটতে হয়।
তাহসান-মিথিলা:
আলোচিত সেলিব্রিটি জুটি তাহসান-মিথিলা। অফুরন্ত ভালোবাসার কাছে বিচ্ছেদ যেন একেবারেই নগণ্য। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট প্রেমের সম্পর্কের ইতি টেনে বিয়ে করেন তারা। সংসারে যোগ হয় আইরা তাহরিম নামে তাদের একমাত্র কন্যা। ভক্তরা বেভেছিলেন এই দম্পতি কখনও আলাদা হবেননা। তবে কোটি ভক্তদের বিশ্বাস ভেঙে দীর্ঘ ১১ বছরের সংসারের ইতি টানেন তাহসান-মিথিলা।
শাকিব খান-অপু বিশ্বাস:
সুপারস্টার শাকিব খান ও চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। ২০০৮ সালে ১৮ এপ্রিল শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের বিয়ে হয়। বিয়ের ব্যাপারটি কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে রেখে তারা দুজন শুটিং অব্যাহত রাখেন। দীর্ঘদিন আড়ালে থেকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ছয় মাস বয়সের ছেলে আব্রামকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন অপু। আট বছর আগের সে বিয়ের খবর জনসমক্ষে আসার পর দুজনের সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছে যে, শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস নিজেদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ করে দেন। তারপরই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন শাকিব খান।
একুশে সংবাদ/স.টি/না.স
আপনার মতামত লিখুন :