তাঁদের জীবনের গল্প সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই। তুমুল প্রেম, বাগ্দানের পর সবাই যখন বিয়ের অপেক্ষায়; তখন হঠাৎই আসে বিচ্ছেদের ঘোষণা। এরপর দীর্ঘ সময় গড়িয়েছে, দুজনেই ভিন্ন সম্পর্কে থিতু হয়েছেন। তবে নিয়তি বোধ হয় চেয়েছিল তাঁদের পুনর্মিলন, শেষ পর্যন্ত সেটাও হয়। কিন্তু দুই বছর গড়াতেই সম্পর্ক ভাঙল, সম্পর্কের দ্বিতীয় সুযোগও কাজে লাগাতে পারলেন না হলিউডের তারকা দম্পতি বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। এএফপি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্টে বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন গায়িকা-অভিনেত্রী লোপেজ।
২০০২ সালে ‘গিগলি’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় এই যুগলের প্রেমের শুরু। সে সময় তাঁদের প্রেম নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তাঁরা ছিলেন সেই সময়ে হলিউডের অন্যতম চর্চিত জুটি। একটি ট্যাবলয়েড শিরোনাম দেওয়ার পর থেকেই তাঁরা পরিচিতি পান ‘বেনিফার’ নামে।
এরপর ২০০৩ সালে তাঁদের বাগ্দান হয়। তবে এর পরের বছর সেই বাগ্দান ভেঙে যায়। এর পরই আলাদা সম্পর্কে জড়ান বেন ও লোপেজ।
২০০৪ সালে গায়ক মার্ক অ্যান্থনিকে বিয়ে করেন লোপেজ। ২০১৪ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাঁদের দুই সন্তান আছে। বেন অ্যাফ্লেকের সঙ্গে এটি ছিল লোপেজের চতুর্থ বিয়ে।
অন্যদিকে ২০০৫ সালে অভিনেত্রী জেনিফার গার্নারকে বিয়ে করেছিলেন বেন। ২০১৮ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বেন ও গার্নার জুটির তিনটি সন্তান আছে। বিচ্ছেদের পর বেন ও লোপেজ যখন সিঙ্গেল, তখনই আসে তাঁদের পুনর্মিলনীর খবর। ২০২১ সালের এপ্রিলে আবার তাঁদের প্রেমের খবর পাওয়া যায়। সেটার সত্যতা মেলে দ্রুতই, ২০২২ সালের এপ্রিলে দ্বিতীয়বারের মতো বাগ্দান সারেন দুই তারকা। একই বছরের ১৬ জুলাই প্রথম বাগ্দান ভাঙার ১৭ বছর পর গাঁটছড়া বাঁধেন বেন ও লোপেজ।
বিয়ের পর লোপেজ নিজের ওয়েবসাইটে লিখেছিলেন, ‘বিয়েটা করেই ফেললাম। ভালোবাসা সুন্দর। ভালোবাসা উদার। ২০ বছর পর আমাদের ভালোবাসা পরিণতি পেল।’ পরে দেওয়া আরেকটি সাক্ষাৎকারে লোপেজ বলেছিলেন, ‘আমাদের ভালোবাসার গল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ এল।’
বিয়ের পর এক-দেড় বছর দারুণ সময় কাটে তাঁদের। হলিউডের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বেনের সিনেমার প্রিমিয়ারে নিয়মিত হাজির হয়েছেন লোপেজ, লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় ডিনার করতে গিয়ে প্রায়ই ক্যামেরাবন্দী হয়েছেন। গত বছরই লস অ্যাঞ্জেলেসে ৬০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে নতুন বাড়ি কেনেন তাঁরা।
সর্বশেষ চলতি বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত গোল্ডেন গ্লোবে পাওয়া যায় বেন ও লোপেজকে। এর পর থেকেই তাঁদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন রটে। দীর্ঘদিন তাঁদের একসঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তখনই বিভিন্ন পশ্চিমা গণমাধ্যম তাঁদের বিচ্ছেদের খবর প্রচার করে। যদিও সেটা বরাবরই অস্বীকার করেছেন লোপেজ। গত ২৪ জুলাই বেনকে ছাড়াই নিজের ৫৫তম জন্মদিন উদ্যাপন করেন লোপেজ। এই অনুষ্ঠানে বেনের অনুপস্থিতি তাঁদের বিচ্ছেদের গুঞ্জনে নতুন করে ঘি ঢেলে দেয়। এর মধ্যেই মার্কিন গণমাধ্যম টিএমজেড খবর প্রকাশ করে, যৌথ মালিকানায় কেনা লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন বেন ও লোপেজ।
কিছুদিন আগেই পূর্বনির্ধারিত গ্রীষ্মকালীন কনসার্টগুলো বাতিল করেন লোপেজ। তখনই চাউর হয়, সম্পর্ক নিয়ে জটিলতার কারণেই কনসার্ট বাতিল করেছেন তিনি। যদিও বিবৃতিতে লোপেজ বলেছিলেন, পরিবারকে সময় দিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু দেখা গেল, গুঞ্জনই সত্যি হলো; বিচ্ছেদের পথ বেছে নিলেন দুই তারকা। যদিও বিচ্ছেদ নিয়ে বেন বা লোপেজ কারোরই আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/প.আ./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :