হার্ট ফেইলিওর মানেই অনেকে বোঝেন হ়ৃদ্যন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়া। অনেকেরই ধারণা, হার্ট অ্যাটাক আর হার্ট ফেইলিওর ব্যাপারটা ‘এক’। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, এই দু’টি সমস্যা সম্পুর্ণ আলাদা।
বিভিন্ন কারণে হৃদ্যন্ত্রের পেশি দুর্বল হয়ে গিয়ে পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে রক্ত চলাচল ব্যহত হয়, অক্সিজেনের ঘাটতিতে শুরু হয় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। এটাই হার্ট ফেইলিওর। চিকিৎসকের হার্ট ফেইলিওরকে ‘অসুখ’ না বলে, বলেন ‘সিনড্রোম’।
অন্যদিকে হার্ট অ্যাটাক ব্যাপারটা অন্য রকম। হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী ধমনীতে চর্বির প্রলেপ জমে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে হার্টের পেশি অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে শুরু করে। দ্রুত চিকিৎসা না করালে হৃৎপিণ্ডের পেশির বিভিন্ন অংশগুলি ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে শুরু করে। প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় নানা অনিয়মের ফলে হার্ট অ্যাটাকের পাশাপাশি হার্ট ফেলিওরের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। বেশ কিছু উপসর্গ দেখে হার্ট ফেইলিওরের বিষয় সতর্ক হওয়া যায়। কিছু উপসর্গ ঘুমের মধ্যে দেখা দিলেও সতর্ক হতে হবে বইকি। জেনে নিন ঘুমের মধ্যে কোন লক্ষণগুলি হার্ট ফেইলিওরের উপসর্গ হতে পারে।
১) শ্বাস নিতে কষ্ট: ঘুমের মধ্যে যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তা হলে কিন্তু সেই উপসর্গকে কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়। হার্ট ফেইলিওরের ক্ষেত্রে এমন উপসর্গ প্রায়ই লক্ষণীয়। এ ক্ষেত্রে রোগীর বিছানায় শুয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই শ্বাস নেওয়ার জন্য তাঁকে উঠে বসতে হয়। এই সমস্যাকে বলা হয় অর্থোপনিয়া।
২) প্যারোক্সিসমাল নক্টার্নাল ডিসপনিয়া (পিএনডি): হার্ট ফেলিওর সমস্যা হলে গভীর রাতে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন রোগী। একে বলা হয় প্যারোক্সিসমাল নক্টার্নাল ডিসপনিয়া। এই সমস্যা সাধারণত ঘুমিয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টা পরে শুরু হয়। শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি মনের ভিতর উদ্বেগ, অজানা কারণে ভয়, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা যায়।
৩) কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট: এ ক্ষেত্রে ফুসফুসে তরল জমে থাকার কারণে কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ঘুমের মধ্যে কাশি হলেও সতর্ক থাকতে হবে।
৪) হঠাৎ হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়া: হার্ট ফেইলিওরের কারণে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। বুক ধড়ফড়ানির কারণে শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়। এই কারণে আচমকা ঘুম ভেঙে যায় রোগীর।
৫) রাতে হঠাৎ হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া: হার্ট ফেইলিওরের সমস্যা শুরু হলে রাতে ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যেতে পারে। ওই সময় বুকে ব্যথা, ঘাম হওয়া, বুক ধড়ফড় করার মতো উপসর্গগুলি দেখা যেতে পারে। এমন উপসর্গ মাঝে মধ্যেই হলে সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সূত্র : আনন্দবাজার
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :