ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভসমূহ দাঁড় করাতে দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি এবং প্রতিটি মানুষকে ডিজিটাল সংযুক্তির আওতায় আনতে হবে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ টেলিকম নিয়ন্ত্রণ কমিশনের দায়িত্ব চ্যালেঞ্জিং।
ডিজিটাল সংযুক্তির পাশাপাশি রোবটিক্স,এআই, আইওটি, ব্লকচেইন ইত্যাদি নতুন নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে চলা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি দেশের জন্য কমবেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। এসএআরটি সম্মেলনে যোগদানকারী দেশগুলোর সমস্যাগুলোও প্রায় অভিন্ন। মন্ত্রী ডিজিটাল বৈষম্য দূর করাসহ বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আজ ঢাকার একটি হোটেলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিটিআরসি ও এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটি) আয়োজিত দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কাউন্সিল (এসএটিআরসি) এর ২৪তম সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
এসএটিআরসির নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিটিআরসির প্রধান শ্যাম সুন্দর সিকদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এপিটি সেক্রেটারি জেনারেল মাসানোরি কোন্ডো বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী বাংলাদেশকে এসএটিআরসির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় সদস্য দেশ সমূহের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সড়ক ও রেলপথের মত দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে ডিজিটাল সংযোগের মহাসড়ক নির্মাণ করা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে। এসএটিআরসির সদস্য দেশ সমূহের মধ্যে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে এই অঞ্চলের জন্য ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে বলেও উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে বিটিআরসিকে ইতোমধ্যে সক্ষম এবং দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশকে কম্পিউটার যুগে উন্নীত করেন। ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রা আমরা শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮.৫ ভাগ এলাকায় মোবাইলের ফোরজি প্রযুক্তি পৌছে গেছে। আমরা ৫জি চালু করেছি। প্রতি ইউনিয়নে পৌছেছে ফাইবার অপটিক্স। ডিজিটাল সংযুক্তির শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এই স্মার্ট বাংলাদেশই বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা।
মন্ত্রী ডিজিটাল সংযুক্তি স্মার্ট বাংলাদেশের মূলভিত্তি উল্লেখ করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৪১’ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তিন দিন ব্যাপী সম্মেলন থেকে আমরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে বিজ্ঞজনদের পরামর্শ অনেক কাজে আসবে।
সম্মেলনে ভারত,পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইরানসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের প্রায় ১০০ জন প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করেন। ৩ অক্টোবর এ সম্মেলন শুরু হয়। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এসএটিআরসি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থা বেতার তরঙ্গ সমন্বয়, স্টান্ডার্ডাইজেশন, রেগুলেটরি প্রবণতা, টেলিযোগাযোগ খাত উন্নয়নের কৌশল এবং টেলিযোগযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে গৃহীত কর্মকৌশল দেশে ডিজিটাল সংযুক্তি ও প্রযুক্তি বিকাশে বিটিআরসির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফলপ্রসূ অবদান রেখে চলেছে।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :