ভারতের বিহার রাজ্যে জাতপাত ভিত্তিক জরিপের তথ্য প্রকাশ করেছে বিহারের রাজ্য সরকার। সোমবার নীতীশ কুমারের সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবৃতিও দিয়েছেন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী।
রাহুল গান্ধী বলেন, বিহারের জাতিশুমারি থেকে জানা গেছে, ওবিসি+এসসি+এসটি সেখানে ৮৪ শতাংশ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ৯০ জন সচিবের মধ্যে মাত্র ৩ জন ওবিসি, যারা ভারতের বাজেটের মাত্র ৫ শতাংশ পরিচালনা করেন! তাই ভারতের জাতপাতের পরিসংখ্যান জানা জরুরি। যত বেশি জনসংখ্যা, তত বেশি অধিকার- এটাই আমাদের ব্রত।
কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ এক বার্তায় কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে একটি জাতীয় জাতিশুমারি পরিচালনা করার দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে ৬৩ শতাংশ ‘ওবিসি’র (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) মধ্যে ৩৬ শতাংশ অতি অনগ্রসর (ইবিসি) সম্প্রদায়ের এবং ২৭ শতাংশের সামান্য বেশি সাধারণ অনগ্রসর গোষ্ঠীর। এ ছাড়া বিহারে প্রায়ে সাড়ে ১৯ শতাংশ তপশিলি জাতি এবং ১.৬৮ শতাংশ তপশিলি উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন বলে ওই রিপোর্টে প্রকাশ। অসংরক্ষিত (জেনারেল) শ্রেণির বাসিন্দা সাড়ে ১৫ শতাংশের সামান্য বেশি।
সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, বিহারে ১৪ শতাংশ যাদব, ব্রাহ্মণ ৩.৬৬ শতাংশ, রাজপূত ৩.৪৫ শতাংশ, কুর্মি ২.৮৭ শতাংশ, মুসাহর ৩ শতাংশ এবং ভূমিহার রয়েছেন ২.৮৬ শতাংশ। বিহারে মোট জনসংখ্যা ১৩ কোটি ৭ লাখ ২৫ হাজার ৩১০ জন। এরমধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা হল ২ কোটি ৩১ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৫। অর্থাৎ, রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যার হার ১৭.৭০ শতাংশ।
আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদন দেওয়ার পরেই দেশ জুড়ে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছিলেন জেডিইউ নেতা ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এরপরেই জেডি(ইউ)-আরজেডি-কংগ্রেস-বামফ্রন্ট সমন্বিত মহাজোট সরকার বিহারে দ্রুত শুরু করে জাতিশুমারি। কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিহারসহ বেশ কিছু রাজ্যে সরকারি চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ‘ওবিসি’দের জন্য এখন ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু বিহারে ‘ওবিসি’দের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ পেরিয়ে যাওয়ায় এ বার আরও বেশি সংরক্ষণের দাবি উঠবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :