যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছয় বছরের এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশুকে ২৬ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ছুরি হামলায় গুরুত্বর আহত হয়েছে ওই শিশুর মা। খবর আল জাজিরা।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে শিকাগো থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার (৪০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি বাড়িতে আহত অবস্থায় ওই মা ও তার ছেলে শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় বছরের শিশুটিকে ২৬ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে ও তার ৩২ বছর বয়সী মাকে গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৭১ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন পুলিশ। হামলাকারীর বিরুদ্ধে হত্যা ও ঘৃণামূলক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া হিসাবে ও ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে ওই ব্যক্তি ছোট্ট শিশু ও তার মায়ের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে পুলিশের অভিযোগ।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) জানিয়েছে, নিহত শিশুর নাম ওয়াদেয়া আল-ফাইয়ুম ও তার মায়ের নাম হানান শাহিন। পরিবারটি দুই বছর ধরে একটি বাড়ির নিচতলায় বাস করত। সন্দেহভাজন ব্যক্তি তাদের বাড়িওয়ালা।
এদিকে বিবিসি জানায়, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম জোসেফ কসুবা। শনিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ৭১ বছর বয়সী এই অভিযুক্তের কপালে কাটা দাগ ছিল।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার বাড়ির শয়নকক্ষে মা এবং শিশুটির ওপর হামলা চালায় জোসেফ। আহত অবস্থায় কোনও রকমে ‘৯১১’ ইমারজেন্সি নম্বরে ডায়াল করেন ভুক্তভোগী নারী। পুলিশ পৌঁছে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নারী ও তার সন্তানকে পড়ে থাকতে দেখে। আর বাড়ির সামনেই নির্বিকারভাবে বসে ছিল অভিযুক্ত জোসেফ।
গ্রেফতারের পর গোয়েন্দারা জোসেফকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্রতিশোধ’ নিতে এই হামলা চালান তিনি।
বেঁচে যাওয়া হানান শাহিন বলেন, জোসেফের মধ্যে এর আগে ইসলাম বিদ্বেষী কোনো মনোভাবে দেখা যায়নি। তবে শনিবার জোসেফ হঠাৎ করেই তাদের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে। আর যখন হানান দরজা খুলে দেন, তখনই জোসেফ তাকে শ্বাসরোধ ও ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। এমনকি হামলাকারী সেসময় চিৎকার করে বলতে থাকেন, তোমাদের মুসলমানদের মরতে হবে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে সোমবার (১৬ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণার বশবর্তী হয়ে করা এ ধরনের ভয়াবহ অপরাধের কোনো স্থান নেই। এমন আচরণ আমাদের মৌলিক মূল্যবোধ বিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সব ধরনের ধর্মান্ধতা ও ঘৃণা থেকে দূরে থাকতে হবে।
একুশে সংবাদ/জ.ন.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :