লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ ইহুদিবাদী ইসরাইলকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে ধ্বংস হতে দেবে না হিজবুল্লাহ।
রোববার (৫ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেয়া এক বিবৃতিতে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে ইসরাইলি যুদ্ধমন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ট গাজা উপত্যকায় দখলদার সেনাদের স্থল অভিযানের চূড়ান্ত লক্ষ্য ঘোষণা করেছেন। সেই লক্ষ্যটি হচ্ছে, হামাসের অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেয়া। কিন্তু এ ধরনের লক্ষ্য নির্ধারণের সমস্যা হলো এর মাধ্যমে যুদ্ধ জয়ের দাবি করা সম্ভব হয় না। গ্যালান্ট যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তা অর্জন করতে হলে হামাসের সকল শীর্ষ নেতাকে হত্যা করতে এবং অবশিষ্ট যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে হবে।
হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি ইসরাইলি সেনাবাহিনী তা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে না এবং ইসরাইল যুদ্ধ জয়ের দাবি করতে পারবে না। যদি গোটা গাজা উপত্যকাও ধ্বংস হয়ে যায় এবং হামাসের অন্তত ২০ হাজার যোদ্ধাও নিহত হয় তারপরও তেল আবিব গাজা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার দাবি করতে পারবে না।
হিজবুল্লাহ আরো বলেছে, শেষ পর্যন্ত যদি হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জীবিত রাখার পাশাপাশি হামাসের যোদ্ধাদেরকে অক্ষত রেখে ইসরাইলকে গাজা উপত্যকা ত্যাগ করতে হয় তাহলে কার্যত তেল আবিব যুদ্ধে পরাজিত হবে। সে অবস্থায় হামাস এই বলে বিজয়ের দাবি করবে যে, ইসরাইল তার ঘোষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, কিন্তু এসব হিসাবের বাইরে ইসরাইলের সামনে যে বড় বাধাটি রয়েছে সেটি হচ্ছে হিজবুল্লাহ। ইসরাইল যদি সত্যিকার অর্থে গাজা সিটি দখল করার মূল্য পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে হামাসের নেতাদেরকে হত্যা করার মতো যুদ্ধাস্ত্র ও জনবল তার আছে। কিন্তু হিজুবল্লাহ যখন হামাসকে বাঁচিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখন গাজা দখলের ইসরাইলি বাসনা অপূর্ণ থেকে যাবে। ইসরাইল যেমন হামাসের নেতৃত্বকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেমনি হামাসকে রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছে হিজবুল্লাহ।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সেই নিরিখে যে মুহূর্তে মনে হবে হামাসের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে সেই মুহূর্তে হিজবুল্লাহ তার সমস্ত শক্তি নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত হিজবুল্লাহ নিজেকে লেবানন সীমান্তে সীমিত আকারের অভিযানের মধ্যে আটকে রাখবে; সেখানে কতটা ক্ষতি হলো কিংবা কত কী অর্জিত হলো সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
হিজবুল্লাহর বিবৃতিতের শেষ বাক্যে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সামনে এখন দু’টি পথ খোলা রয়েছে। পরাজয় স্বীকার করে গাজা ত্যাগ করা অথবা লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত থাকা।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :