কোনো প্রেমিক যদি প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন, তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা যাবে না। সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে এমনই নির্দেশ দিল ভারতের ছত্তীসগঢ় হাই কোর্ট।
বিচারপতি পার্থপ্রতিম সাউয়ের একক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘যদি কোনও ছাত্র বা ছাত্রী পরীক্ষায় খারাপ ফল হয়েছে বলে আত্মহত্যা করেন, সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়। তার জন্য ওই ছাত্র বা ছাত্রীর শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না।’
ওই তুলনা টেনে এক যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘প্রেমে ব্যর্থ হয়ে যদি কোনও প্রেমিক আত্মহত্যা করেন, তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করা যায় না।’
আদালত এ-ও বলে, কোনও দুর্বল চিত্তের মানুষ যদি কোনও কারণে নিজেকে শেষ করে দেন, তার জন্য অন্য কাউকে দোষারোপ করা যায় না।
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ছত্তীসগঢ়ের এক যুবকের রহস্যমৃত্যু হয়। আঙুল ওঠে তিন জনের দিকে। প্রাক্তন প্রেমিক আত্মহত্যা করার পর এক ২৪ বছর বয়সি তরুণী এবং তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই তিন জনের জন্য মানসিক চাপে ছিলেন তাঁদের ছেলে। সেখান থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশ দু’পাতার একটি চিঠি উদ্ধার করে। সেটা ‘সুইসাইড নোট’ বলেই ধরা হয়। তাতে ওই যুবক লিখেছিলেন, আট বছরের সম্পর্ক ভেঙে দিয়ে আর এক জনকে বিয়ে করেছেন প্রেমিকা। তারপরও সাবেক প্রেমিকার দুই ভাই তাকে নানা রকম হুমকি দিতেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
মৃত যুবকের কাকা রাজনন্দগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাক্রমে নিম্ন আদালত আত্মহত্যায় প্ররোচনা-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা করার নির্দেশ দেয়। তার পর অভিযুক্ত তিন জন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি সাউয়ের পর্যবেক্ষণ, হুমকির যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় না। অবশেষে মামলাটি খারিজের নির্দেশ দেন তিনি।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :