গুজরাটের সুরাটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস গড়ে তুলেছে ভারত। বিশ্বের হীরা বাণিজ্যের আধিপত্য বিস্তারের আশায় এই অফিস গড়ে তোলা হয়েছে। এতদিন মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরের অফিস পেন্টাগনকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবন বলে জানত। তবে সেই তকমা ছাড়িয়েছে পেন্টাগন।
ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের হীরা বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তারের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় রোববার (১৭ ডিসেম্বর) গুজরাটে অবস্থিত সুবিশাল অফিস কমপ্লেক্স সুরাট ডায়মন্ড বুর্স আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হবে।
সুরাট ডায়মন্ড বুর্স নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ বিলিয়ন রুপি বা ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার। এটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় গত জুলাই মাসে। অফিসটি ৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন বর্গফুট (৬ লাখ ২০ হাজার বর্গমিটার) এলাকা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে এটিই হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম অফিস কমপ্লেক্স, যা ছাড়িয়ে গেছে পেন্টাগনকেও। কারণ ১৯৪৩ সালে খোলা মার্কিন ল্যান্ডমার্কটির নির্মিত হয়েছে ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন বর্গফুট এলাকায়।
নতুন কমপ্লেক্সটি ডায়মন্ড রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেন্টাইল সিটির অভ্যন্তরে অবস্থিত। এখানে ৯টি ১৫ তলা টাওয়ার রয়েছে এবং প্রায় ৪ হাজার ৭০০টি অফিস রয়েছে। সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের সভাপতি নাগজিভাই সাকারিয়ার মতে, প্রায় ১৩৯টি অফিস ইতিমধ্যেই সচল রয়েছে।
সুরাট ডায়মন্ড বুর্স ছাড়িয়েছে গেছে ইসরাইলের ডায়মন্ড এক্সচেঞ্জকেও। যার আয়তন ৮০ হাজার বর্গমিটার। সেখানে কেবল ১ হাজারটিরও বেশি অফিস রয়েছে। তাছাড়া সেখানে বীমাকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, একটি পোস্ট অফিস, একটি কাস্টমস অফিসের পাশাপাশি বিনোদন, খাবার এবং ধর্মীয় সুযোগ-সুবিধার মতো পরিষেবা রয়েছে।
রোববার সুরাটের এই কমপ্লেক্সটি উদ্ধোধন করবেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যা কি না তার নিজ রাজ্যে মোদির আরেকটির রাজনৈতিক প্রতীকী জয় হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। কেননা, আগামী বছরের নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে আবারও ক্ষমতা আসতে সর্মথন প্রয়োজন মোদির।
তাছাড়া গুজরাটকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে মোদি প্রসাশনের যে প্রচেষ্টা রয়েছে, তারও একটি বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে সুরাট ডায়মন্ড বুর্স।
যদিও দীর্ঘদিন ধরে ভারতের হীরা রফতানির কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত মুম্বাই, তবুও ‘ডায়মন্ট সিটি’ নামে পরিচিত সুরাট মূলবান এই রত্নগুলোর প্রক্রিয়াকরণের ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে। কেননা, এখানেই বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ আনকাট হীরা কেটে পালিশ করা হয়। তারপর তা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো দেশগুলোতে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়। আর এই শিল্পকে একই ছাদের নিচে কেন্দ্রীভূত করার লক্ষ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে সুরাট ডায়মন্ড বুর্স।
ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ডায়মন্ড বোর্সেসের প্রেসিডেন্ট এলি ইজহাকফ বলেছেন, সুরাত হচ্ছে ডায়মন্ড কাটিংয়ের একটি প্রধান কেন্দ্র। নতুন অফিসটিতে সারাবিশ্বের বিক্রেতারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিরাপদে বাণিজ্যিক কার্যকালাপ করতে পারবেন। এখানে ভারতের হীরার বাণিজ্যকে কেন্দ্রীভূত করা হলো।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :