লোহিত সাগরে বিভিন্ন জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের নির্বিচারে আক্রমণ, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার ঘটনায় নৌ-বাণিজ্য স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ শিপিং কোম্পানিগুলো। এই তালিকায় আছে ডেনমার্কের শিপিং এবং লজিস্টিক জায়ান্ট এপি মোলার-মারস্ক এবং জার্মান শিপিং এবং কনটেইনার পরিবহন প্রতিষ্ঠান হ্যাপাগ-লয়েডের মতো শীর্ষ শিপিং কোম্পানিগুলো। এই প্রতিষ্ঠান দুটি বৈশ্বিক জ্বালানির ১০ শতাংশ সমুদ্রপথে পরিবহন করে থাকে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) তাদের স্থগিতাদেশের এমন সিদ্ধান্তগুলো জানান দিচ্ছে যে, এমন সব বড় করপোরেশনগুলো লোহিত সাগরের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের তেলের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি এর নেতিবাচক প্রভাব গিয়ে পড়বে ভোক্তা পর্যায়ে। তবে এমন সংকটে বিশ্বের শক্তিধর ও পরাশক্তিগুলো কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, তার ওপরও নির্ভর করে অনেক কিছু, সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে এমন অভিমত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এই সাগরপথে তেলবাহী জাহাজে গত মাসজুড়ে হুতি বিদ্রোহীরা আক্রমণ চালিয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর যে তিনটি জাহাজে তারা হামলা চালিয়েছে, এর মধ্যদিয়ে এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওই তিনটি জাহাজের সহায়তায় জন্য ‘ইউএসএস কার্নি’ নামে যে মার্কিন রণতরী সেদিকে এগিয়ে যায়, তাকে লক্ষ্য করেও ড্রোন হামলা চালায় হুতিরা। তবে সবকটি ড্রোন গুলি করে বিধ্বস্ত করা হয়।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর জ্বালানি তেল সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। এদিকে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেকভুক্ত দেশগুলোর সরবরাহ কমানোর ঘোষণা তেলের বৈশ্বিক সরবরাহে অনিশ্চয়তা ও ধোঁয়াশা তৈরি করে। বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান সিএমসি মার্কেট বিশেষজ্ঞ টিনা টেং জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধের পরোক্ষ প্রভাব লোহিত সাগরে ছড়িয়ে পড়ায়, নতুন করে তেলের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যুদ্ধের ধরণ বিশ্লেষণ করে বলা যায়, খুব শিগগিরই লোহিত সাগরে হুতি হামলা বন্ধের তেমন কোনো নিদর্শন দেখা যাচ্ছে না।
ওয়াশিংটনভিত্তিক শক্তিবিষয়ক তথ্য সংস্থা এনার্জি ইন্টেলিজেন্সের সিনিয়র বিশ্লেষক কলবি কনেলি আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, লোহিত সাগরে এই আক্রমণগুলোর প্রভাব তেলের বাজারে সীমিতভাবে প্রভাব ফেলবে। তবে এটি পুরোপুরি অস্বীকার করার মতো নয়।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু এই আক্রমণগুলো এখনো চলছে, তাই বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। অপরিশোধিত তেলের দাম সপ্তাহের শেষের দিকে গত কয়েকদিনের তুলনায় অনেক বেড়েছে। যেহেতু এমন আক্রমণগুলো দেখে মনে হচ্ছে না যে, মধ্যপ্রাচ্যের নীতিনির্ধারকদের তা দমানোর কোনো কার্যকর প্রচেষ্টা রয়েছে। বিশ্লেষণটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :