গাজা উপত্যকায় হামাসের হামলায় মারাত্মক আহত একজন ইসরাইলি সেনার শরীরে ভয়ঙ্কর ফাঙ্গাল ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ায় গাজার সংক্রমিত রোগগুলো ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ছত্রাক সংক্রমণের কারণে গতকাল (মঙ্গলবার) ওই সেনার মৃত্যুর পর বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরাইল এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ আগে আহত ওই সেনাকে ইসরাইলের অ্যাশদোদ শহরের একটি সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং অতি উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও ওই সেনার শরীরের ছত্রাক সংক্রমণ দূর করা যায়নি এবং শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়েছে।
সামরিক চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও নিরূপণ করতে পারেননি তবে তারা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে, গাজা থেকে আহত অবস্থায় ফিরে যাওয়া সেনাদের মধ্যে এই ধরনের বিচ্ছিন্ন কিছু ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ঘটনা ধরা পড়েছে। তবে বেসামরিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা টাইমস অব ইসরাইলকে বলেছেন, মারাত্মক ওই সংক্রমণ যতটা বিচ্ছিন্ন বলে দাবি করা হচ্ছে ততটা বিচ্ছিন্ন নয় বরং গাজা থেকে ফেরত আসা বহু আহত সেনার মধ্যে একই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
ইসরাইলের হাসপাতালগুলো বলেছে, গাজা ফেরত আহত সেনাদের শরীরে মারাত্মক অ্যান্টিবায়োটিক্যাল-রেসিস্ট্যান্ট ইনফেকশন ধরা পড়ছে। অর্থাৎ কোনো অ্যান্টি-বায়োটিক প্রয়োগ করেই তাদের শরীরের সংক্রমণ প্রতিহত করা যাচ্ছে না।
ইসরাইলি মহামারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নাদাভ ডেভিডোভিচ বলেছেন, যেসব কারণে এই সংক্রমণ ঘটছে তার মধ্যে প্রধান কারণ গাজার দুষিত মাটি। বেন-গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক অবশ্য বলেন, গাজাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অসুস্থতার তুলনায় ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে আক্রান্তের হার এখনও কম।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের ভয়াবহ আগ্রাসনে গাজা উপত্যকার বিশাল অংশ ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ফলে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের জন্য এক বিকট মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। গাজাবাসীর পর্যাপ্ত খাবার, সুপেয় পানি ও পয়োঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া নানা ধরনের সংক্রমিত রোগ গাজায় যুদ্ধরত হাজার হাজার ইসরাইলি সেনার স্বাস্থ্যকে বিপদাপন্ন করে তুলছে। টাইমস অব ইসরাইল লিখেছে, শেষ পর্যন্ত ইসরাইলি সেনাদের মাধ্যমে এসব রোগ ইসরাইলের গণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :