ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্মম হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছেছে। এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলায় ৬১ হাজার ৫০০ জনের বেশি লোক আহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা ও অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় `১৬৩ জন নিহত ও ৩৫০ জন আহত হয়েছে`।
বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়েছে যে, অনেক মৃতদের এখনও ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে এবং গাজার সড়কে পড়ে আছে। ধ্বংস্তুপের কারণে অ্যাম্বুলেন্স ক্রু এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের হত্যার স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস (ওএইচসিএইচআর) বলেছে যে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী হামলার উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে ওএইচসিএইচআর বলেছে যে, ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত অঞ্চলে অভিযান বাড়াচ্ছে এবং তারা বুধবার নাবলুসের বালাতা শরণার্থী শিবিরের কাছে একটি গাড়িতে বিমান হামলায় নয়জনকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু।
ওএইচসিএইচআরের ফিলিস্তিন অফিস বলেছে যে, ফিলিস্তিনিদের বেআইনি হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলকে অবশ্যই হত্যাকাণ্ডের একটি দ্রুত, স্বাধীন এবং কার্যকর তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত ১০০ দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত, আহত এবং নিখোঁজের সংখ্যা এক লাখে পৌঁছেছে। ইসরায়েলি হামলার কারণে বহু মানুষ দীর্ঘমেয়াদে অক্ষম হয়ে গেছে।
সংস্থাটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের হতাহতের এই পরিসংখ্যানে ইসরায়েলি সেনার মাধ্যমে গ্রেফতার, জোরপূর্বক নিখোঁজের পাশাপাশি ধ্বংস হওয়া হাজার হাজার ভবনের নিচে আটকা পড়া ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যারা বিভিন্ন ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে আটকে রয়েছেন তাদেরকে মৃত বলে মনে করা হচ্ছে।
সংস্থাটি আরও উল্লেখ করেছে যে, গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি (মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ) নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে তাদের বাড়িঘর এবং আবাসিক এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৯ হাজার ৭০০ আবাসন ইউনিট সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া এক লাখ ৮৭ হাজার আবাসন ইউনিট আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেনেভা-ভিত্তিক গ্রুপটি বলেছে যে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গাজা থেকে বিশাল জনসংখ্যাকে উৎখাত করার লক্ষ্যে হামলা চালাচ্ছে। এটি সম্ভবত যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :