আর্জেন্টিনা এক সময় বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ ছিল। ধনী দেশের তালিকায় ফ্রান্স ও জার্মানির উপরে ছিল। আর্জেন্টিনার এই অবস্থা তৈরি হয়েছিল শুধু গরুর মাংস রপ্তানি করে। যার বড় বাজার ছিল ব্রিটেন। যদিও এটা ১০০ বছরের আগের কথা।
বর্তমানে আর্জেন্টিনার অবস্থা খুবই ভঙ্গুর। দেশটি চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যানুসারে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এখন আর্জেন্টিনার অবস্থান ৭০তম।
দেশটিতে অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই খারাপ অবস্থানে রয়েছে যে দেশটির নাগরিকদের কাছে গরুর মাংস খাওয়া এখন বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে। অন্যান্য মানুষের মতো ২০ বছর ধরে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্সে বসবাস করছেন নবদম্পতি ওরিয়ানা এবং সামির।
বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে ওরিয়ানা বলেন, পরিস্থিতি খুবই খারাপ, দামের কারণে গুরুর মাংস খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না, এজন্য আমাদেরকে মুরগির মাংস খেয়ে থাকতে হচ্ছে। কারণ এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা।
গত বছর আর্জেন্টিনাতে মূল্যস্ফীতি ২১১ শতাংশ বেড়েছে। যা তিন দশকের মধ্য সর্বোচ্চ। এ ছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটিতে পণ্য দ্রব্যের দাম ২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
এই দম্পতি একটি ছোট ফ্ল্যাটে ভাগাভাগি করে থাকছেন। তারা সব সময়ই বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে গিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। কারণ প্রতিনিয়তই দেশটিতে খাবার, ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল এবং যাতায়াতের খরচ বাড়ছে।
সামির নিজে গাড়ি চালিয়ে ডেলিভারির কাজ করে থাকেন। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে যা আয় করছেন তার দিয়ে জীবনধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সে রাস্তার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন। কারণ মানুষ প্রচণ্ড হতাশায় ভুগছে। সামরি বলেন, অবস্থা এমন যে সাধারণ একটি মোবাইল ফোনের জন্য যে কেউ খুনের শিকার হতে পারেন।
বর্তমানে আর্জেন্টিনাতে ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রতার সঙ্গে বাস করছেন। যদিও এটি সরকারি হিসাব। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভিন্ন।
একুশে সংবাদ/ন.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :