পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার ইনসাইট স্টোরি অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান পিপিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার জামান কুরেশি।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের ভোটগ্রহণ হয়। কিন্তু ফল প্রকাশে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বিলম্ব হয়। গত তিন দিন ধরে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
রোববার সম্পূর্ণ ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কোনো দলই সরকার গড়ার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এই পরিস্থিতিতে সরকার গড়তে জোট গঠনের বিকল্প নাই।
এরই মধ্যে নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের সরকারের পতন ঘটিয়ে যে জোট সরকার হয়েছিলো তাতে পিএমএল-এনের সঙ্গে পিপিপিও ছিলো। কিন্তু এবার সেরকম জোট গঠন যে সহজ হবে না তা পিপিপি নেতাদের বক্তব্যেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোট গ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে একটি আসনের ফল স্থগিত হওয়ায় মোট ফলাফল পাওয়া গেছে ২৬৪ আসনের।
এতে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এদের মধ্যে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত ৯৭ জন জয় পেয়েছেন।
একক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৭৬টি আসনে জয় পেয়েছে পিএমএল-এন। ৫৪টি আসন পেয়েছে পিপিপি। এছাড়া অন্যান্য দল ও প্রার্থীরা পেয়েছেন ৩৭টি আসন।
ভোটের সমীকরণ বলছে, সরকার গঠনের জন্য পিপিপির সমর্থন যে কারো জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এমন অবস্থায় পিপিপি নেতা হায়দার কুরেশি বলেছেন, তারা সরকার গঠনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টিকে প্রথমে বিবেচনা করবেন। এক্ষেত্রে তারা পিএমএল-এনকে বিবেচনা করছেন না।
এর আগে পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট গড়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের। তাছাড়া সরকার এবং অর্থনীতি পরিচালনার বিষয়ে দুই দলের দৃষ্টিভঙ্গিও আলাদা।
এর আগে পিপিপির শীর্ষ নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জিও নিউজকে বলেছিলেন, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করছেন।
কিন্তু পিটিআইর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পিপিপির সঙ্গে জোট সরকার গঠনে এখনো কোনো আগ্রহ দেখায়নি। বরং বিভিন্ন সময় দলটির নেতাদের দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এনে তাদের সঙ্গে কোনো ধরণের আলোচনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন ইমরান খান।
পিপিপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইমরান খানের উপদেষ্টা জুলফি বুখারি বলেছেন, ভোটের ফলাফলে অনিয়মের বিষয়ে তারা আদালতে যে অভিযোগ দিয়েছেন তার যদি ন্যায় বিচার পান তাহলে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। ফলে সরকার গড়তে তাদের জোট গঠনের কোনো প্রয়োজন নাই।
আপনার মতামত লিখুন :