রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দশকেরও বেশি সময়ের পর উত্তর কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১৮ জুন) পুতিন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হতে পারে, এ জন্য বিষয়টিতে বিশেষ নজর রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব।
পুতিন সর্বশেষ ২০০০ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার যাত্রা শুরুর দিকে উত্তর কোরিয়ায় সফর করেছিলেন। তখন উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন কিম জং ইল; যিনি দেশটির বতর্মান নেতা কিম জং-উনের বাবা।
পরবর্তীতে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এ বছরই পুতিন উত্তর কোরিয়ায় এই সফরে যাচ্ছেন। রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক যে গভীর হয়েছে- এটি তারই সর্বশেষ উদাহরণ। দুই দেশের এই সখ্য নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব উদ্বিগ্ন।
সোমবার (১৭ জুন) ক্রেমলিনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহ থেকেই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন উত্তর কোরিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফরে যাবেন এ নিয়ে আলোচনা চলছিল। অবশেষে মঙ্গলবার পুতিন উত্তর কোরিয়ায় দুই দিনব্যাপী সফরে যাবেন বলে নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন।
রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ সফরের মধ্য দিয়ে রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার নিরাপত্তা বিষয়ক একটি অংশীদারিত্বের চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মধ্যেও দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধে পুতিনের প্রয়োজন সমরাস্ত্রের সহায়তা। আর এমন সময়েই তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি শত্রুতা পোষণকারী উত্তর কোরিয়ায় সফরে যাচ্ছেন। যা পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের জন্যও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায় ২০১৯ সালে করোনা মহামারির পর থেকে কোনো প্রভাবশালী বিশ্বনেতা ভ্রমণ করেননি। আবার জল ও আকাশ সীমায় গোয়েন্দা বিমান আর জাহাজ পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া মিলে সার্বভৌমত্বে আঘাতের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে উত্তর কোরিয়া। কোরীয় উপদ্বীপে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই উত্তর কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যকার বর্ধিঞ্চু সম্পর্ক পশ্চিমা দুনিয়ায় উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন সফরে পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবেন।
এদিকে ক্রেমলিন পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফরকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সফর’ হিসেবে বিবেচনা করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়া সফরের পর ভিয়েতনাম সফরে যাবেন।
গত সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন তার সাজোয়া ট্রেনে রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভ্রমণ করেন। ওই ভ্রমণে কিম রাশিয়ার একটি কারখানায় যান, যেখানে যুদ্ধবিমান তৈরি করা হয়।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :