রাশিয়ার উত্তর ককেশাস অঞ্চলে অবস্থিত দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রের দুটি শহরে ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের চারটি ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালিয়েছে একদল বন্দুকধারী। একইসঙ্গে, পুলিশের একটি চেক পোস্টেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৫ পুলিশসহ কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৬ জন হামলাকারী রয়েছে বলে জানা গেছে।
রবিবার (২৩ জুন) দাগেস্তানের সবচেয়ে বড় শহর মাখাচকালা এবং দেরবেন্ত শহরে হামলার এসব ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলাকারীদের পরিচয় সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে অতীতে দাগেস্তানে ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার নজির রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেরবেন্ত এবং মাখাচকালা শহরে গির্জায় অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব পেন্টেকস্ট চলছিলো, তখন এই হামলার ঘটনা ঘটে। বন্দুকধারীরা দুটি গির্জা এবং দুটি ইহুদি উপাসনাল সিনাগগকে লক্ষ্য করে আকস্মিক হামলা চালায়। এতে মাখাচকালার একটি গির্জায় একজন ধর্মযাজকও নিহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। হামলার এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রুশ প্রশাসন।
হামলার পর ঘটনাস্থলের বেশকিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এ ছাড়া মাখাচকালা শহরের একটি ভিডিওতে কালো পোশাক পরা কয়েকজন ব্যক্তিকে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেও দেখা গেছে। ঘটনার পর জরুরি সেবা সংস্থার সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন।
বন্দুকধারীদের হামলায় ১৫ জন পুলিশ সদস্য মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দাগেস্তান প্রজাতন্ত্রের নেতা সের্গেই মেলিকভ।
অন্যদিকে, হামলায় অংশগ্রহণকারী ছয় ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দাগেস্তানের দেরবেন্ত শহর ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষের একটি প্রাচীন আবাসস্থল। বন্দুকধারীরা সেখানকার একটি সিনাগগ এবং একটি গির্জায় হামলা চালায়। হামলার পর উপাসনালয়গুলোতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।
রাশিয়ার দারিদ্রপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে দাগেস্তান অন্যতম। এটি রাশিয়ার মুসলিমপ্রধান এলাকাগুলোরও একটি। এর আগে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ‘ককেশাস আমিরাত’ নামের একটি ইসলামপন্থী সশস্ত্র সংগঠন দাগেস্তান এবং এর পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি রুশ প্রজাতন্ত্রে হামলা চালায়।
এর আগে, মার্চে মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলের একটি কনসার্টে হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিলো।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :