হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির উত্তরসূরি নির্বাচনে আগামীকাল শুক্রবার ভোট দেবেন ইরানের জনগণ। এবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়ছেন ছয় জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনই কট্টরপন্থী। নির্বাচিত হলে অর্থনৈতিক সংস্কার, মুদ্রাস্ফীতি কমানো এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলাসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা।
এর আগে ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার চালায় প্রার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক কেন্দ্র বা অন্যান্য স্থানেও বক্তব্য রেখেছেন তাঁরা। গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থনৈতিক সংস্কার, মুদ্রাস্ফীতি কমানো ও পররাষ্ট্রনীতির ওপর।
বিভিন্ন জরিপে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে আছেন, মোহাম্মাদ বাগের গালিবাফ, সাইয়েদ জালিলি ও মাসুদ পেজেশকিয়ান। বাস্তববাদী কট্টর অবস্থানের জন্য পরিচিত ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সাবেক কমান্ডার ৬২ বছরের গালিবাফ আগে তিন বার প্রার্থী হয়ে দুবার হেরে যান। ২০২১ সালে প্রত্যাহার করেন প্রার্থিতা। বর্তমানে পার্লামেন্টের স্পিকার গালিবাফ, তেহরানের মেয়র হিসেবে রেকর্ড ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
ইরানের সাবেক মেয়র ৫৮ বছরের সাঈদ জালিলি, আগে দুইবার প্রেসিডেন্ট পদে লড়েছেন। এর মধ্যে ২০২১ সালে তিনি ইব্রাহিম রাইসিকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ান। আশির দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে গার্ডদের পক্ষে লড়াই করার সময় তিনি তাঁর ডান পা হারান।
এবার একমাত্র মধ্যপন্থী প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ৭০ বছরের মাসুদ পেজেশকিয়ান। পাঁচ বারের এমপি পেজেশকিয়ান, দুর্নীতির বিষয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করে পরিচিতি পান। ২০২২ সালে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তবে খুব একটা পিছিয়ে নেই বাকি তিন প্রার্থী, আমির হাশেমি, আলি রেজা জাকানি ও মোস্তফা পোরমোহাম্মদিও। ১৯ মে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই নির্বাচন হচ্ছে।
ইরানের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ইসরায়েল-হামাস দ্বন্দ্বের কারণে আঞ্চলিক উত্তেজনা চলছে। এ ছাড়া ইরানের দ্রুত অগ্রসরমান পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে পশ্চিমা চাপ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশটির ভেতরে অসন্তোষ বাড়ছে।
একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :