AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

লোকসভার পর বিধানসভা নির্বাচনে আরও কোণঠাসা মোদির জোট


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯:১৭ পিএম, ১৩ জুলাই, ২০২৪
লোকসভার পর বিধানসভা নির্বাচনে আরও কোণঠাসা মোদির জোট

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটের পর প্রথম পরীক্ষাতেই হোঁচট খেয়েছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। সাতটি রাজ্যের ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে ধরাশায়ী গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে দুর্দান্ত ফল করেছে বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ইন্ডিয়া জোট। ১৩ আসনের মধ্যে ১০টি আসনেই জয়লাভ করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, আপ, ডিএমকে-সহ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকেরা। বিজেপির ভাগ্যে এসেছে মাত্র দুটি আসন। একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গে চারটি আসনের সবক’টি আসনেই জয়ী হয়েছে ঘাসফুল শিবির। ফলে এখানে কার্যত হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বিজেপি শিবির। অন্যদিকে দেশের নিরিখে পাঞ্জাবের জলন্ধরে জয়ী আপ। হিমাচলের দুটি আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস শিবির। তামিলনাড়ুতে বড় ব্যাবধানে জয়লাভ করেছে শাসকদল ডিএমকে। সবদিক থেকে দেখলে দেখা যাচ্ছে, লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোটের নৌকার পালে যে হাওয়া লেগেছিল তা এখনও বজায় রয়েছে।

গত বুধবার (১০ জুলাই) দেশটির সাতটি রাজ্যের ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো হল রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদা ও মানিকতলা (পশ্চিমবঙ্গ), রুপাউলি (বিহার), ভিক্রাবন্দী (তামিলনাড়ু), অমরওয়ারা (মধ্যপ্রদেশ), বদ্রিনাথ ও মংলৌর (উত্তরাখণ্ড), জলন্ধর ওয়েস্ট (পাঞ্জাব), দেহরা, হামিরপুর ও নালাগড় (হিমাচল প্রদেশ)। এই কেন্দ্রগুলির কোথাও বিধায়কদের মৃত্যু, আবার কোথাও বিধায়কদের ইস্তফার কারণে এই আসনগুলি ফাঁকা হয়ে যায়। আর সেই কারণেই এখানে উপনির্বাচন জরুরি হয়ে পড়ে।

পশ্চিমবঙ্গ : বাংলার চার আসনেই বড় মার্জিনে জয়লাভ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। সর্বশেষ ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ, বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে জিতেছিল বিজেপি। প্রার্থীদের দল বদলের জেরে উপনির্বাচন হলে এবার এই তিন আসনেই বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস। আর মানিকতলা তৃণমূলের ছিল। তৃণমূল বিধায়ক সাধারণ পান্ডের মৃত্যুতে আসনটি খালি হলে উপনির্বাচনে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ফলাফলে উত্তর কলকাতার এই আসনটিও শাসকদলেরই থাকছে।

বিহার-বিহারের রুপাউলি আসনে আট হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী শংকর সিং। পরাজিত করেছেন এনডিএ জোটের দল জেডিইউ-এর প্রার্থীকে।

তামিলনাড়ু: তামিলনাড়ুর বিক্রবন্দীতে ডিএমকে বিধায়কের মৃত্যুতে উপনির্বাচন হয়েছিল। এই আসনে জয় ধরে রেখেছে ডিএমকে প্রার্থী।

মধ্য প্রদেশ- আমরওয়ারাতে জয়ী বিজেপি প্রার্থী কমলেশ শাহ।কমলেশ প্রতাপ শাহ পেয়েছেন ৮৩ হাজার ১০৫ ভোট। নিকটবর্তী কংগ্রেস প্রার্থী ধীরন শাহ সুখারাম দাস ইনভাটি হেরে গিয়েছেন। তিনি ৮০ হাজার ৭৮ ভোট পেয়েছেন।

উত্তরাখণ্ড: উত্তরাখন্ডের দুটি আসনেই জয় পেয়েছে কংগ্রেস। উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ আসনে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের লাখপত সিংহ বুতোলা। হেরে গিয়েছেন বিজেপির রাজেন্দ্র ভাণ্ডারী, নির্দল প্রার্থী নাভাল কিশোর খালি। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা এবং ইলাহাবাদে (বর্তমান নাম প্রয়াগরাজ) হারার পরে এ বার উত্তরাখণ্ডের তীর্থক্ষেত্র বদ্রীনাথেও ধারাশায়ী পদ্ম।

রাজ্যটির মঙ্গলৌরে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের কাজি মহম্মদ নিজামউদ্দিন। হেরে গিয়েছেন বিজেপির কর্তার সিংহ ভাদানা, বিএসপির উবাইদুর রহমান।

পঞ্জাব: জলন্ধর পশ্চিম আসনে জয়ী আম আদমি পার্টির প্রার্থী মহিন্দর ভাগত। বিজেপির শীতল অঙ্গুরল রিঙ্কুকে হারিয়ে জয়ী হলেন আম আদমি পার্টির প্রার্থী মহিন্দর ভগত।ব্যবধান প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার ভোটের। ২০২২ সালে জয়ী আপ প্রার্থী রিঙ্কুর বিজেপিতে যোগদানের ফলে উপনির্বাচন হয়েছিল বুধবার। এ বার ভোটে রিঙ্কু লড়ছিলেন বিজেপির টিকিটে।

হিমাচল প্রদেশ: হিমাচলের তিনটি আসনে দুটিতে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। শুধুমাত্র হামিরপুর বিধানসভা আসন ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি।

হিমাচলের হামিরপুর বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী আশিস শর্মা। কংগ্রেসের পুষ্পেন্দ্র বর্মাকে দেড় হাজার ভোটে হারালেন তিনি। ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটে ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস এবং বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে জিতেছিলেন আশিস। সম্প্রতি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল।

হিমাচলপ্রদেশের নলগড়ে ৩৪ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়ে জিতেছেন কংগ্রেসের হরদীপ সিংহ বাওয়া। তিনি ৩৪ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়েছেন। হেরে গিয়েছেন বিজেপির কেএল ঠাকুর, নির্দল প্রার্থী হরপ্রীত সাইনি।

হিমাচলপ্রদেশের দেহরা আসনে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী কমলেশ ঠাকুর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর স্ত্রী তিনি। কমলেশ ৩২ হাজার ৭৩৭টি ভোট পেয়েছেন। বিজেপির হোশিয়ার সিংহ ২৩ হাজার ৩৮৮টি ভোট পেয়েছেন, নির্দল প্রার্থী সুলেখা চৌধরি ১৭১টি ভোট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

উপনির্বাচনের ফল বিচার করলে ইন্ডিয়া জোটের এই উত্থান বিজেপি শিবিরে অনেকটাই চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহল। সামনেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে ফের নতুন কৌশল আনতে হবে গেরুয়া শিবিরকে।

এরই মধ্যে শনিবার ফলপ্রকাশের পরই মুম্বই থেকে কলকাতায় ফিরেছেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দমদম বিমানবন্দরে নেমেই ফলাফল নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান মমতা। জয়ের উচ্ছ্বাস পরিমিত রেখেই সংক্ষেপে বললেন, ‘এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়। জয় রাজ্যবাসীকে উৎসর্গ করলাম। চারটের চারটেতেই আমরা জিতেছি।’

জয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে আসন অর্থাৎ মানিকতলা আমাদের ছিল, আমাদেরই আছে। কিন্তু বাকি তিনটি আসনে গত বিধানসভা আর লোকসভা- দুটোতেই বিজেপি জিতেছিল। সেই আসনগুলোও আমরা জিতেছি।

নবনির্বাচিত বিধায়কদের কর্তব্যের কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়ল। মানুষের কাজ আরও বেশি করে করতে হবে। মনে রাখবেন, আমরা মানুষের জন্যই আছি। তাদের কাজের জন্য আমরা নির্বাচিত হই। তাই কাজ না করে অন্য কিছু করলে চলবে না। আর এই জয় আমরা আগামী ২১ জুলাই, শহিদ দিবসে তাদের প্রতি উৎসর্গ করব, যারা সেদিন সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে আন্দোলনে নেমে প্রাণ দিয়েছিলেন।

 

একুশে সংবাদ/এ.ট.প্র/জাহা

 

Link copied!