সারা বিশ্বের পারমাণবিক এবং সামরিক গোপনীয়তা চুরির চেষ্টা করছে উত্তর কোরিয়া। এ লক্ষ্যে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির হ্যাকাররা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে টার্গেট করছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ কোরিয়া এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা সারা বিশ্বের সরকার ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো থেকে পারমাণবিক এবং সামরিক গোপনীয়তা চুরি করার চেষ্টা করছে বলে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া সতর্ক করেছে।
তারা বলছে, আন্ডারিয়েল এবং অনিক্স স্লিট নামে পরিচিত এই গ্রুপটি পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক এবং পারমাণবিক কর্মসূচি ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে গোপন তথ্য হাতে পাওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, পারমাণবিক এবং প্রকৌশল সংস্থাগুলোকে টার্গেট করছে।
উত্তর কোরিয়ার এই গ্রুপটি ইউরেনিয়াম প্রক্রিয়াকরণ থেকে ট্যাংক, সাবমেরিন এবং টর্পেডো পর্যন্ত বিস্তৃত বিষয়ে তথ্য খুঁজে চলেছে এবং এসব তথ্য হাতে পেতে তারা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারতসহ অন্য অনেক স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
মার্কিন বিমান বাহিনীর ঘাঁটি, নাসা এবং প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোকেও টার্গেট করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই গ্রুপটি মার্কিন স্বাস্থ্যসেবা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে র্যানসমওয়্যার অপারেশনের মাধ্যমে তাদের গুপ্তচরবৃত্তির কার্যকলাপে অর্থ জুগিয়ে থাকে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের (এনসিএসসি) অপারেশন ডিরেক্টর পল চিচেস্টার বলেছেন: ‘আজ আমরা যে বৈশ্বিক সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির গোপন অভিযানকে উন্মোচন করেছি, তাতে দেখা যাচ্ছে- উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট ব্যক্তিরা তাদের দেশের সামরিক ও পারমাণবিক কর্মসূচি আরও সামনে এগিয়ে নিতে ইচ্ছুক।
এনসিএসসি মনে করে, উত্তর কোরিয়ার রিকনেসান্স জেনারেল ব্যুরো (আরজিবি) ৩য় ব্যুরোর একটি অংশ হচ্ছে আন্ডারিয়েল।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জারি করা যৌথ এই সতর্কীকরণ উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একে অপরকে রক্ষা করতে সহায়তা করার পরামর্শ শেয়ার করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হ্যাকারদের গোপন অভিযানে রোবট যন্ত্রপাতি, যান্ত্রিক অস্ত্র এবং থ্রিডি প্রিন্টিং উপাদানগুলোর বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে।
গুগল ক্লাউডের ম্যান্ডিয়েন্ট প্রিন্সিপাল অ্যানালিস্ট মাইকেল বারনহার্ট বলছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার গোষ্ঠীগুলোর এসব কর্মকাণ্ড নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে এবং এটি উপেক্ষা বা অবহেলা করা যায় না।
মূলত গত কয়েক বছর ধরে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সম্পর্কে ধারাবাহিক যে সতর্কতা জারি রয়েছে তার মধ্যে এটিই সর্বশেষ।
একুশে সংবাদ/ঢা.পো/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :