জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সেকেলে কাঠামো সংস্কার এবং আফ্রিকার জন্য একটি স্থায়ী আসন বরাদ্দ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, এই মহাদেশের এক বিলিয়নেরও (১০০ কোটি) বেশি মানুষের জন্য নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী প্রতিনিধিত্বের অভাব মেনে নেয়া যায় না।
সোমবার (১২ আগস্ট) একটি উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক চলাকালীন পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে এই আহ্বান জানা তিনি।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিশ্বের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিরাপত্তা পরিষদের গঠন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মেনে নিতে পারি না, বিশ্বের প্রভাবশালী শান্তি ও নিরাপত্তা সংস্থায় একটি বিশাল মহাদেশের জন্য স্থায়ী কণ্ঠস্বর নেই। আফ্রিকা ও বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার প্রশ্নে তাদের মতামতকে অবমূল্যায়ন করার বিষয়টিও আমরা মেনে নিতে পারি না।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ১৫ সদস্য বিশিষ্ট। এদের মধ্যে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য এবং বাকি ১০টি অস্থায়ী সদস্য। ভেটো ক্ষমতা সম্পন্ন এই পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ হলো—চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
বাকি ১০টি অস্থায়ী আসন আঞ্চলিকভাবে ভাগ করে বরাদ্দ করা হয়েছে। এদের মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য তিনটি; এশিয়া-প্যাসিফিক, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় এবং পশ্চিম ইউরোপ ও অন্যান্য দেশের জন্য দুটি করে এবং পূর্ব ইউরোপের জন্য একটি বরাদ্দ দেয়া।
গত মে মাসে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আফ্রিকান দেশগুলোর ভূমিকা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছিল নিরাপত্তা পরিষদ।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস বিতর্কে বলেন যে, আফ্রিকার নিরাপত্তা পরিষদে স্পষ্টতই কম প্রতিনিধিত্ব থাকা একটি ভুল, যা ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তির নীতির বিরুদ্ধে যায়। জাতিসংঘকে বর্তমান বিশ্বের প্রতিফলন করতে হবে, ৮০ বছর আগের বিশ্বের নয়।
সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাডা বায়ো আফ্রিকার জন্য দুটি স্থায়ী আসন এবং আরো দুটি অস্থায়ী আসন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আফ্রিকান ইউনিয়ন আফ্রিকার স্থায়ী সদস্যদের নির্বাচন করবে। আফ্রিকা ভেটো ক্ষমতা বিলুপ্ত করতে চায়। তবে, যদি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলি ভেটো ক্ষমতা বজায় রাখতে চায়, তাহলে এটি নতুন স্থায়ী সদস্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে হবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :