ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান আগ্রাসনে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অঞ্চলটির জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-তাওয়াবতা। মূলত ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়াদের—যাদের এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি—বিষয়টি আমলে নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম আল-কুদসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রসন চলছে ১০ মাসের বেশি সময় ধরে। এই সময়ের মধ্য অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী।
ইসমাইল আল-তাওয়াবতা জোর দিয়ে বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরে ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রসনের প্রভাব পড়েছে। তিনি জানান, ইসরায়েলি আগ্রাসনে, এখন পর্যন্ত গাজার ৮৮৫ চিকিৎসক ও নার্স নিহত হয়েছে। এছাড়া, ১৬৮ জন সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পেশার মানুষ, ৭৯ জন সিভিল ডিফেন্স অফিসার, ১০০ জনের বেশি বিজ্ঞানী, গবেষক, চিন্তক এবং ইউনিভার্সিটি শিক্ষক, ৯ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এবং ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ শিক্ষক নিহত হয়েছেন।
আল-তাওয়াবতা বলেছেন, দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশের বেশি চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের শুরু থেকে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে, এবং আহতের সংখ্যা ৯২ হাজার ৪০১ জনে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল-বারশ বলেছেন, তাদের প্রকাশিত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহের কোনো সুযোগ নেই। কারণ, ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত প্রত্যেকের রেকর্ড তাদের কাছে আছে।
আল-বারাশ জানান, আমাদের অনুমানগুলো ইঙ্গিত করে যে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা বর্তমান সংখ্যার চেয়ে আরো ১০ হাজার বেশি। তার মতো একই কথা বলেছেন, গাজা উপত্যকায় নরওয়ের চিকিৎসা সহযোগিতা দলের প্রধান ম্যাডস গিলবার্ট। তিনি বলেছেন, গাজায় নিহতের আনুমানিক সংখ্যা ঘোষিত সংখ্যার চেয়ে তিনগুণ বেশি হবে।
গিলবার্ট যোগ করেন যে, বর্তমান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে সব হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই এবং তাদের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ দেয় না। তার মতে, অনুমান ঠিক থাকলে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজারের মধ্যে।
সূত্র: আল-জাজিরা
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :