দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলাস মাদুরো বিজয়ী হয়েছেন বলে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনীব্যবস্থার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন আদালত।
ভেনিজুয়েলায় ২৮ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির নির্বাচন কমিশন সিএনই বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিল।তবে সাইবার হামলার শিকার হওয়ার দাবি করে মাদুরো কত শতাংশ ভোট পেয়েছেন, তা প্রকাশ করেনি সিএনই।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের অভিযোগ, ভোটের ফল যেন প্রকাশ করতে না হয় সে জন্য সাইবার হামলার অজুহাত দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে মাদুরোর দাবি, তিনি ৫২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিনি এ মাসের শুরুতে আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন বলে সিএনই জানিয়েছে।
সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এতে নির্বাচনে মাদুরো বিজয়ী হয়েছেন বলে ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া নির্বাচনী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানান সুপ্রিম কোর্ট।
আদালতের এমন ঘোষণার পর মাদুরোর প্রতিপক্ষ ৭৪ বছর বয়সী গনসালেস উরুটিয়া আদালতের বিরুদ্ধে মাদুরোকে ‘খুশি’ করার অভিযোগ তোলেন।
নির্বাচনের দিন উরুটিয়ার সমর্থকরা ভেনিজুয়েলার প্রায় ৩০ হাজার ভোটকেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ ভোটকেন্দ্রের ভোট গণনার কপি সংগ্রহ করতে সমর্থ হন। পরে সেগুলো অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা গেছে, উরুটিয়া দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়েছেন। তবে মাদুরোর দলের দাবি, কপিগুলো ‘ভুয়া’।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আদালতের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিচারকদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন জাতিসংঘের তথ্য-অনুসন্ধান প্যানেলের প্রধান মার্টা ভ্যালিনাস।
এছাড়া হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আমেরিকা বিভাগের পরিচালক হুয়ানিতা গ্যোবের্তুসও সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণার নিন্দা করেছেন।
চিলির প্রেসিডেন্ট গাব্রিয়েল বোরিচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘সন্দেহ নেই আমরা এমন এক স্বৈরাচারের মুখোমুখি হয়েছি, যিনি নির্বাচনে প্রতারণা করেন, যারা ভিন্নভাবে চিন্তা করে তাদের দমন করেন।’ উরুগুয়ে ও গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্টও বৃহস্পতিবার ভেনিজুয়েলার সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন।
নির্বাচনে মাদুরোর জয়ের সমালোচনা করায় ভেনিজুয়েলা লাতিন আমেরিকার আটটি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
এদিকে নির্বাচনের পর সংঘাতে ভেনিজুয়েলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। ১৯০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। প্রায় দুই হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :