আজ ঐতিহাসিক ‘নাইন- ইলেভেন’। ইতিহাসের এই দিনে ২০০১ সালে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এতে নিহত হন ২ হাজার ৯৭৭ জন। আর আহত হন ৬ হাজারের বেশি মানুষ। ২৩ বছরেও সে দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারেননি মার্কিনিরা।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মানুষের আহাজারি আর আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ। এই দিনে দেশটির ইতিহাসে ভয়াবহতম সন্ত্রাসী হামলা হয়, যা ‘নাইন- ইলেভেন’ নামে পরিচিত। যে হামলার ভয়াবহতায় শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, থমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চারটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ছিনতাই করে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের তিন জায়গায়। প্রথমে নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা টুইন টাওয়ারে দুটি বিমান বিধ্বস্ত করা হয়। প্রথম বিমানটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে। দ্বিতীয় বিমানটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয় এর অল্পক্ষণ পর, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে। বিমান বিধ্বস্তের ফলে মুহূর্তেই ভবন দুটিতে আগুন ধরে যায়। ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। আটকা পড়ে বহু মানুষ।
তৃতীয় হামলাটি হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর পেন্টাগনে। তবে চতুর্থ বিমান হামলাটি সফল হয়নি। পেনসিলভেনিয়ায় গিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হয়, এই বিমানটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনে হামলার পরিকল্পনা ছিল।
ভয়াবহ এসব হামলায় নিহত হন কয়েক হাজার মানুষ। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, হামলায় সব মিলিয়ে মারা যান ২ হাজার ৯৭৭ জন। প্রায় ৭৭টি দেশের মানুষ নিহত হন। আর আহত হন ৬ হাজারের বেশি।
হামলার পেছনে ওসামা বিন লাদেনের সংগঠন আল-কায়েদার দিকে আঙুল তোলে যুক্তরাষ্ট্র। এর জেরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ সন্ত্রাস দমনে আফগানিস্তানে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যার রেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইরাক, সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
দীর্ঘ ২০ বছর পর ২০২১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলাকারীদের বেশিরভাগ সৌদি নাগরিক হলেও হামলার পরিকল্পনা কিংবা পরিচালনার সঙ্গে সৌদি সরকার কিংবা তাদের কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা ছিল না। টুইন টাওয়ারে হামলার পর দায় স্বীকার করেছিল আল-কায়েদা নেটওয়ার্ক। এ ঘটনায় সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সন্দেহ তৈরি হয়েছিল।
এদিকে, ১১ সেপ্টেম্বরের ওই হামলার পর বিশ্বব্যাপী বিমান ভ্রমণের নিরাপত্তা জোরদার করা হয় ওয়াশিংটনে। মার্কিন কংগ্রেস `প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট` নামে একটি আইন পাস করে। এ আইনের আওতায় সরকার যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি চালাতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, নাইন-ইলেভেনের ঘটনা পুরো বিশ্বকেই বদলে দেয়। বিশ্বব্যাপী বেড়ে যায় কঠোর নজরদারি আর যুদ্ধ পরিস্থিতি।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :