বিদ্যুৎ চুক্তি সম্পর্কিত সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে বাংলাদেশের উচিত আদানি গ্রুপের সঙ্গে বসা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এমনটাই পরামর্শ দিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন মতে, এদিন সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জ্যাসওয়াল এই পরামর্শ দেন।
রণধীর জ্যাসওয়াল বলেন, আদানির কাছ থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিটি বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং তাই বিষয়টি সেভাবেই মোকাবিলা করা উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনি যেটা উল্লেখ করলেন, তা একটা বেসরকারি প্রকল্প। এটা দুটি পক্ষের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতা চুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখানে একটা পক্ষ ভারতীয়, অপর পক্ষ বাংলাদেশি। এই চুক্তি বা ব্যবস্থা কীভাবে চলবে তা নির্ধারণ করবে এই দুই পক্ষ।’
বৃহস্পতিবারই বাংলাদেশের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী আদানি পাওয়ারসহ ভারতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
প্রতিবেদন মতে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ করে আদানি গ্রুপের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। কী ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, শর্তগুলো কী-এসব নিয়ে। কারণ বিদেশি কোনও কোম্পানি বাংলাদেশের আইন অমান্য করতে পারবে না।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, এই তদন্তের উদ্দেশ্য ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো নয়। বরং বাংলাদেশ আসলে আদানি পাওয়ারকে কত টাকা দিচ্ছে এবং সেটা যৌক্তিক কিনা, সেসব প্রশ্নের জবাব খোঁজা।
বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের আদানি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ও আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড (এপিজেএল)-এর মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি হয়।
২৫ বছরের জন্য ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করে তারা। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি পাওয়ার। এখন সেখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে ঢাকা।
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ পাওনা অর্থ চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
প্রতিবেদন মতে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি গ্রুপ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়। এ পাওনার জন্যই প্রধান উপদেষ্টার কাছে গৌতম আদানি চিঠি লিখেছেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :