তাইওয়ানের একটি কোম্পানির কাছে কয়েক মাস আগে কয়েক হাজার পেজার তৈরির অর্ডার দিয়েছিল লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। কিন্তু ওই পেজারগুলোর মধ্যে গোপনে সামান্য পরিমাণে বিস্ফোরক বসিয়ে দেয় ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। একাধিক নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লেবাননজুড়ে পেজার বিস্ফোরণে এক শিশুসহ নয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২ হাজার ৮০০ জন। আহতদের মধ্যে বহু হিজবুল্লাহ যোদ্ধা এবং লেবাননে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতও রয়েছেন।
এসব বিস্ফোরণের জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেছে লেবানিজ গোষ্ঠীটি। তারা বলেছে, এর জন্য ইসরায়েলকে ‘উপযুক্ত শাস্তি’ পেতে হবে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইসরায়েল বহুদিন ধরেই এই ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল।
লেবাননের একটি জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, তাইওয়ান-ভিত্তিক কোম্পানি গোল্ড অ্যাপোলোর কাছে পাঁচ হাজার বিপার বা পেজার তৈরির অর্ডার দিয়েছিল হিজবুল্লাহ। চলতি বছরের শুরুর দিকে সেগুলো লেবাননে পৌঁছায়। নিরাপত্তা সূত্রটি ছবি দেখে পেজারের মডেল এপি৯২৪ বলে শনাক্ত করেছে। এটি অন্যান্য পেজারের মতোই লিখিত (টেক্সট) বার্তা গ্রহণ ও প্রদর্শন করে, কিন্তু ফোনকল করতে পারে না।
ইসরায়েল যেন অবস্থান শনাক্ত (লোকেশন ট্র্যাকিং) করতে না পারে, সে জন্য যোগাযোগের একটি নিম্ন প্রযুক্তির মাধ্যম হিসেবে এ ধরনের পেজার ব্যবহার করছিল হিজবুল্লাহ। কিন্তু ডিভাইসগুলো একদম ‘উৎপাদন পর্যায়ে’ (প্রোডাকশন লেভেল) পরিবর্তন করে দিয়েছিল ইসরায়েলি গুপ্তচরেরা।
সূত্রের ভাষ্যমতে, মোসাদ পেজারগুলোর ভেতরে এমন একটি বোর্ড বসিয়ে দেয়, যাতে বিস্ফোরক উপাদান ছিল এবং সেটি একটি কোড গ্রহণ করতে পারতো। এটি শনাক্ত করা খুব কঠিন ছিল। এমনকি কোনো ডিভাইস বা স্ক্যানার দিয়েও তা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
সূত্রটি বলেছে, একটি কোডেড বার্তা পাওয়ার পরপরই প্রায় তিন হাজার পেজার বিস্ফোরিত হয়। এই অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ইসরায়েল বা গোল্ড অ্যাপোলো কেউই রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
একুশে সংবাদ/জা.নি./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :