ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিদেশে কোটি কোটি ডলারের সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে এই তথ্য।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীভাবে সরকারি বেতন পেয়েও ভিনদেশে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫ কোটি ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান। ব্রিটেন ছাড়াও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত। সবমিলিয়ে তিনি পাঁচ শতাধিক বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০ কোটি ডলার।
আল-জাজিরা বলছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে সখ্যতা ছিল সাইফুজ্জামানের। গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে তাকে নিজেই এই স্বীকারোক্তি দিতে দেখা যায়। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক… শেখ হাসিনা আমার বস… তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে।’সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরও বাড়ে।
গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে তাদের সাংবাদিক সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যায়। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ সাংবাদিকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামী দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করে পরেন। ওই সময় লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান তিনি। যেটিতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া।
সাইফুজ্জামান আল-জাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান।
একুশে সংবাদ/আ.ট./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :